বৃহস্পতিবার, ১৪ জুলাই, ২০১৬

মুসলমানদের জানা দরকার!!... পৃথিবীর সব থেকে গোপনীয় মিটিং হচ্ছে বিল্ডারবার্গ মিটিং।


পৃথিবীর সর্বোচ্চ ক্ষমতাশীলদের মিটিং এটি। সর্বোচ্চ ক্ষমতাশীল বলতে আমেরিকা, রাশিয়া, চীন-জাপানের কোন প্রেসিডেন্ট নয়। বরং তারা যাদের কথা মতো নিয়মিত ওঠাবসা করে তাদের মিটিং এটি। বাংলাদেশ, পাকিস্তানের মতো দেশগুলো যেভাবে পর্দার আড়ালে থেকে কোন পরাশক্তি পরিচালনা করে, তদ্রুপ বিশ্বের কথিত পরাশক্তি দেশগুলোও তথা সারা বিশ্বের ব্যবসা-বাণিজ্য, রাজনীতি, কূটনীতি, যুদ্ধ-মৈত্রী ইত্যাদি পরিচালিত হয় ঐ মিটিং সদস্যদের ইচ্ছামতো। চেনা পরিচিত ধনীদের মধ্যে শুধুমাত্র বিল গেটস ২০১০ সালে একবার অংশগ্রহণ করেছিল। বিল ক্লিনটন প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে একবার অংশগ্রহণ করেছিলো।
প্রশ্নজাগছে যে কারা এখানে অংশগ্রহণ করে?

একমাত্র বিল্ডারবার্গ ক্লাবের সদস্যরাই এই মিটিং এ অংশ নিতে পারে। পৃথিবীর সবথেকে বড় বড় ব্যাংক এবং প্রতিষ্ঠানের মালিক, বড় বড় কোম্পানির CEO, পৃথিবীর সবথেকে বড় বড় রাজ পরিবারের সদস্য অর্থাৎ পেছন থেকে পুরো পৃথিবী যারা কন্ট্রোল করতেছে এমন ১৫০-২০০ জন মানুষ এই মিটিং এ পার্টিসিপেট করে।
এই বছরের জুন মাসে ৬৩ তম বিল্ডারবার্গ মিটিং অনুষ্ঠিত হয়েছে অষ্ট্রিয়াতে একদম পাহাড়ের মধ্যে একটা ক্যাসেলে। পাহাড়ের আশেপাশের ৬ মাইল ব্যাসার্ধের এরিয়া ৭ দিন আগে থেকে পুরোপুরি সিল করা হয়েছিলো, কোন গাড়িঘোড়া ঢুকতে দেয়া হয়নি। মোট ২ হাজার পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছিলো শেখানে। মজার ব্যাপার হচ্ছে এই বছরে প্রথমবারের মতো বিল্ডারবার্গ গ্রুপ তাদের মিটিং এ যারা পার্টিসিপেট করেছে তার একটা ফুল লিস্ট তাদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছে। এবং গেজ হোয়াট? বারাক অবামা আমন্ত্রিত হয়নি। এরা অ্যামেরিকার প্রেসিডেন্টরে গোনেই না।

বর্তমান বিশ্ব যেসব সুপার এলিটরা পরিচালনা করছেন তাদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে রকারফেলার পরিবার। ১৮শ শতাব্দীর শেষের দিকে তারা তেলের ব্যবসা করে একদম ফুলে ফেপে ওঠে। তখন পুরো পৃথিবীর তেলের ব্যবসায় তাদের একরকম একাধিপত্য ছিল বলা যায়। জানা যায় রকারফেলার পরিবারের অন্যতম সদস্য জন ডি রকারফেলারের একার ব্যক্তিগত সম্পত্তির পরিমাণই ছিল সেই আমলের টাকায় ৪০০ বিলিওন ডলার। অনেকের মতে পুরো রকারফেলার পরিবারের বর্তমান সম্পত্তির পরিমাণ নাকি এখন ৩০০ ট্রিলিওন ডলারের কাছাকাছি।

অবশ্য তাদের টাকার পরিমাণ হিসাব করা বোকামি, কারণ তারাই টাকা বানায়। পৃথিবীর সব বড় বড় ব্যাংকের মালিকানা এদেরই। আর ব্যাংক কীভাবে পরিচালিত হয় তার ব্যাসিক আইডিয়া কারোর থাকলেই জানার কথা যে ব্যাংকই টাকা তৈরি করে।

এখন অনেকের মনে প্রশ্ন আসতে পারে আচ্ছা পৃথিবীর সবথেকে বড় কোম্পানির CEO’রা যদি এই মিটিং এ অংশগ্রহণ করে তাহলে তো গুগোল আর ফেসবুকের CEOদের শেখানে নিয়মিত পাওয়া উচিৎ।
মজার ব্যাপার হচ্ছে অনেকেই জানেনা গুগল ফেসবুক এরা পৃথিবীর টপ ৫০টা কোম্পানির মধ্যে নাই। Exxon Mobil নামে একটি কোম্পানি আছে। এদের সম্পর্কে মজা করে বলা হয় Exxon Mobil চাইলে গুগোল-মাইক্রোসফটের মতো কোম্পানিকে পেটি ক্যাস দিয়ে কিনে নিতে পারে। এই Exxon Mobil, Shell, Chevron সহ পৃথিবীর টপ প্রায় ৮-১০ টা কোম্পানির ডিরেক্ট মালিক এই রকারফেলার ফ্যামিলি। যাই হোক, ১৯ শতকের মাঝামাঝি এসে এই পরিবার এই অর্থবিত্তের উপর ভর করে এতো ক্ষমতাবান হয়ে গিয়েছিলো যে তারা UN এবং মার্কিন সরকারের সব বড় বড় মাথাকে টাকা দিয়ে কিনে নিয়েছিলো।

তখন প্রেসিডেন্ট থিওডর রুজভেল্ট সতর্ক করে দিয়ে বলেছিল, এই রকারফেলার পরিবার তাদের ক্ষমতা দিয়ে নিজেদের অনুশাসনে একটি গোপন Invisible Government তৈরি করতে চাচ্ছে যাদের টার্গেট অদৃশ্য থেকে পুরো পৃথিবী শাসন করা। তার কিছুদিন পরেই রকারফেলাররা তখনকার পৃথিবীর সবথেকে ক্ষমতাবান ৪টা পরিবার রকারফেলার, রথসচাইল্ড, মরগান এবং বুশ পরিবারের প্রত্যক্ষ ফান্ডিং এবং তত্ত্বাবধানে পৃথিবীর সব সুপার এলিটদের সাথে নিয়ে গড়ে তোলে বিল্ডারবার্গ ক্লাব।

প্রথম বিল্ডারবার্গ মিটিং অনুষ্ঠিত হয় ১৯৫৪ সালে। এটাকেই রুজভেল্টের সতর্ক করে দেয়া Invisible Government এর প্রথম সংসদ বলা চলে। এরপর আরও ৬২টা মিটিং হয়ে গেছে কিন্তু এরা ঠিক ৭০ বছর আগে যেমন সিক্রেট ছিল এখনও তেমনই সিক্রেট। এদের নিয়ে কোন মিডিয়া ঘাটায় না। ঘাটাবে কি? এরাই তো মিডিয়ার মালিক। তাদের মিডিয়া তারা নিজেদের মতো করে কন্ট্রোল করে। পৃথিবী আগামী ১০ বছর কেমন চলবে, ভালো না খারাপ, কার সাথে যুদ্ধ হবে, কার সাথে মৈত্রী হবে সব ডিসিশন এরাই নেয়। প্রেসিডেন্টরা সব পাপেট (খেলার পুতুল), এদের নেয়া ডিসিশনই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে এক্সিকিউট করাই প্রেসিডেন্টের কাজ।

যেমন- ওদের মিটিং-এ সিদ্ধান্ত নেয়া হলো- সারা বিশ্বে মুসলমানদের কোনঠাসা করতে হবে, টেরোরিস্ট হিসেবে সাব্যস্ত করতে হবে। কিভাবে করতে হবে সেটা বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেয়া হলো আমেরিকা। আমেরিকা সিআইএকে এ টার্গেট দিলো। সিএআই সৌদির সাহায্য নিয়ে আল কায়দা, তালেবান, লাদেন, আইএসআইস ইত্যাদি তৈরী করলো।
ওদের অঙ্গুলি ইশারায় এভাবেই চলছে বিশ্ব। তাদের গোপন মিটিং থেকে ‘ইউরোপীয় ইউনিয়ন’ সৃষ্টি হয়েছে তবে বাকি আছে পরিকল্পিত এশিয়ান ইউনিয়ন, আফ্রিকান ইউনিয়ন।

তথ্যসূত্র:
http://trivokal.com/গোপন-মিটিং/
https://en.wikipedia.org/wiki/Bilderberg_Group
https://www.youtube.com/watch?v=KYWx_cFzqro
https://www.youtube.com/watch?v=3szaF5R3wsc

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন