বুধবার, ৩১ আগস্ট, ২০১৬

পবিত্র হজ্জ নষ্ট করতে সউদী ইহুদী সরকারের ষড়যন্ত্র:


ফরয পর্দা লঙ্ঘন করে পুরুষ মহিলা একত্রে তাওয়াফ ।
সারা বিশ্বের মুসলমানদের পবিত্র হজ্জ নষ্ট করতে ইহুদী বংশধর সউদী সরকার হজ্জ ব্যবস্থাপনায় নানা ষড়যন্ত্র করেছে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে ফরয পর্দা তরক করে পবিত্র কা’বা শরীফে পুরুষ-মহিলা একত্রে তাওয়াফ। অনেক সম্ভ্রান্ত পর্দানশীন মহিলা হজ্জ থেকে এসে পুরুষ-মহিলা একত্রে তাওয়াফ করার ব্যবস্থা নিয়ে কড়া সমালোচনা করেন।
প্রকৃতপক্ষে পবিত্র কা’বা শরীফ তাওয়াফের ব্যাপারে সুস্পষ্ট হাদীছ শরীফ রয়ে গেছে।
“হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা রাতের বেলা পর্দা করে তাওয়াফ করতেন। উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালামগণ উনারা বাইতুল্লাহ শরীফের অভ্যন্তরে প্রবেশ করতে চাইলে সকল পুরুষ বের করে না দেয়া পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকতেন।” (বুখারী শরীফ)
এখানে স্পষ্ট করেই লেখা আছে, উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালামগণ উনারা পুরুষের সাথে মিশতেন না এবং সকল পুরুষ না বের হলে উনারা তাওয়াফ শুরু করতেন না।
এ হাদীছ শরীফ মেনে সউদী হজ্জ কর্তৃপক্ষ খুব সহজেই যেসব পদক্ষেপ নিতে পারে এবং নেয়াটা হচ্ছে ফরয। তা হলো- ১) তাওয়াফ, পাথর নিক্ষেপ কিংবা সায়ী’র সময় মহিলাদের জন্য আলাদা সময় নির্ধারণ করতে পারে। যেমন মহিলাদের জন্য ৬ ঘণ্টা, পুরুষের জন্য ১৮ ঘণ্টা।
২) মহিলাদের সময়টা মধ্য রাত্রে ও শেষ রাতে হতে পারে। (যখন জামাতের সময় নয়)
৩) পবিত্র কা’বা ঘরের সামনে নামায শুরু হলে অনেক মহিলা পুরুষের পাশাপাশি বা একেবারে সামনে দাঁড়িয়ে যায়, মহিলাদের তাওয়াফ করার সময় আলাদা হলে এ সমস্যা সামাধান হবে।
এখানে মনে রাখতে পর্দা করা ফরয, এটা মহান আল্লাহ পাক উনার নিদের্শ।
মূলত, পবিত্র হজ্জে এসে যেন মুসলমানগণ নিষ্পাপ হয়ে ফিরে যেতে না পারে, বরং অসংখ্য অগণিত গুনাহখাতা নিয়ে ফেরত যায়, সে হীন চক্রান্তই করেছে ইহুদী বংশধর সউদী ওহাবী শাসকরা। নাউযুবিল্লাহ

অতি প্রয়োজনীয় ডাক্তারি টিপস

অতি প্রয়োজনীয় টিপস
=> গলায় মাছের কাটা লেগে গেলে, অর্ধেক লেবু
নিয়ে রস
চুষে খেয়ে ফেলুন। কাটা নরম হয়ে নেমে যাবে।
=> মুখে/জিভে সাদা ঘা হলে, পানির সাথে কর্পূর
গুলে মুখ
দিনে ২ বার ধুয়ে নিন।
=> দই খুব ভাল এন্টাসিড হিসাবে কাজ করে।
এসিডিটির
সমস্যা শুরু হওয়া মাত্র , কয়েক চামচ দই খেয়ে
নিন।
=> ২ টুকরা দারুচিনি ১টি এলাচি, ২টি তেজপাতা
,২টি লবঙ্গ ও
সামান্য চিনি পানিতে ফুটিয়ে ছেকে নিন। হালকা
গরম
অবস্থায় এই পানি খেলে কাশি ভাল হবে।
=> মাথা ব্যথা হলে, কালজিরা একটা পুটলির
মধ্যে বেধে শুকতে থাকুন

একজন ক্লিনার নামাজের ইমামতি করিতেছে। তার পিছনে কয়েকজন উর্ধতন কর্মকর্তা নামাজ আদায় করছে।

দুবাইয়ের একটি শপিং কমপ্লেক্সে একজন ক্লিনার নামাজের ইমামতি করিতেছে। তার পিছনে কয়েকজন উর্ধতন কর্মকর্তা নামাজ আদায় করছে।একেই বলে নামাজে ধনী গরীব, রাজা প্রজা সবাই সমান। আল্লাহর নিকট তাকওয়াই গ্রহনযোগ্য

পবিত্র কুরবানী ঈদের আগে হিন্দু ও নাস্তিকরা অপপ্রচার করে থাকে গরুর গোশত শরীরের জন্য ক্ষতিকর।

পবিত্র কুরবানী ঈদের আগে হিন্দু ও নাস্তিকরা অপপ্রচার করে থাকে গরুর গোশত শরীরের জন্য ক্ষতিকর। নাউযুবিল্লাহ।
মহান আল্লাহ পাক তিনি যা হালাল করেছেন তার মধ্যে কোনো ক্ষতির বিষয় থাকা সম্ভব নয়। তাছাড়া মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি গরুর গোশত খেয়েছেন অর্থাৎ গরুর গোশত খাওয়া সুন্নত । তাই নাস্তিকদের মুখে জুতাপেটা করতে গরুর গোশতের উপকারীতা সর্ম্পকে সংক্ষেপে কিছু বর্ণনা করছি। গরুর গোশতের উপকারিতা সম্পর্কে হিউম্যান হেল্থ এন্ড রিসার্চ সেন্টারের গবেষনা থেকে যে বিষয়টা জানা গেছে, সে বিষয়গুলো পয়েন্ট আকারে উল্লেখ করা হলো:
• গরুর গোশতে আছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন যা পেশী গঠনে সাহায্য করে।
• এতে আছে জিংক যা রোগ প্রতিরোধ আর ক্ষয় পূরণে সাহায্য করে।
• ভিটামিন বি১২ , বি৬ , থায়ামিন,নায়াসিন ও রিবোফ্ল্যাভিনের ভাল উৎস হচ্ছে গরুর গোশত।
• প্রচুর পরিমাণ সেলেনিয়ামও পাওয়া যায়।
• শিশুদের শারীরিক বৃদ্ধি, মানসিক বিকাশে, রক্তকণিকা তৈরিতে এবং অ্যানিমিয়া দূর করতে প্রোটিন, আয়রন, জিংক , ভিটামিন বি প্রয়োজন যা আছে গরুর গোশতে।
• কিছু গবেষণায় দেখা গেছে,গরুর গোশতে বিদ্যমান conjugated linoleic acid (CLA) ক্যানসার প্রতিরোধে সাহায্য করে।
• Creatine থাকে গরুর গোশতে যা মস্তিষ্ক ও পেশীতে শক্তি সংরক্ষন করে।
• কিছু polyunsaturated acids বিশেষ করে eicosapentaenoic acid (EPA), docosahexaenoic acid (DHA) পাওয়া যায় শুধুমাত্র প্রাণীজ উৎস হতেই যা Anti-atherogenic, anti-thrombotic and anti-inflammatory হিসেবে কাজ করে।
চর্বির ভয়ে যারা গোশত খান না, তাদের জন্য টিপস:
• যেসব অংশে চর্বি কম থাকে বা থাকে না যেমন রানের গোশত নির্বাচন করুন।
• যে চর্বি দেখা যায় তা কেটে বাদ দিন।
• তেল কম লাগে (যেমন roasting, broiling, grilling) এমন পদ্ধতিতে রান্না করুন।
• সাথে সবজি যোগ করুন।
• তিন আউন্সের বেশি গোশত খাবেন না।
সুতরাং বাড়ন্ত বয়সী শিশু, সুস্থ মানুষ সকলেই খেতে পারেন গরুর গোশত (সূত্র: http://bit.ly/2clALIu)
প্রোটিনের উৎস:
মাত্র ৩ আউন্স গরুর গোশত খেলে একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের দৈনিক প্রোটিনের চাহিদার অর্ধেক পূরণ হয়ে যায়। গরুর গোশত থেকে যে প্রোটিন পাওয়া যায় তাতে পেশি গঠনের সব এমিনো এসিড আছে। সুগঠিত গোশতপেশি শরীরে বিভিন্ন এনজাইম ও হরমোন উৎপাদিত হবে।
আয়রনের উৎস:
চার বছরের বেশি বয়সের শিশুদের এবং প্রাপ্তবয়স্কদেরপ্রতিদিন ১৮ মিলিগ্রাম আয়রনের চাহিদা থাকে। গরুর গোশতে প্রচুর পরিমাণে আয়রণ আছে। সপ্তাহে দুইবার গরুর গোশত খেলে রক্তের মাধ্যমে পুরো শরীরে অক্সিজেন সরবরাহের জন্য প্রয়োজনীয় আয়রনের চাহিদা পূরণ হয়। মাত্র ৩ আউন্স গরুর গোশতে ২.৪ মিলিগ্রাম আয়রন আছে।
জিঙ্কের উপস্থিতি:
গরুর গোশত দেহের জিঙ্কের অভাব পূরণ করে। জিঙ্ক মানুষের পেশিকে সবল করে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সহায়তা করে। বেশিরভাগ মানুষের শরীরের জন্যই প্রতিদিন ১৫ মিলিগ্রাম জিঙ্ক প্রয়োজন। প্রতি ৩ আউন্স গরুর গোশতে ৫.৫ মিলিগ্রাম জিঙ্ক থাকে।
ভিটামিন বি:
গরুর গোশত বিভিন্ন রকম ভিটামিন-বি-এর একটি অন্যতম উৎস। সুস্থ শরীরের জন্য প্রাকৃতিক উৎসের ভিটামিন-বি গ্রহণ করা জরুরী। গরুর গোশতে আছে ভিটামিন-বি-১২, যা নার্ভ সচল রাখে ও ভিটামিন-বি-৬, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এছাড়াও গরুর গোশতে নিয়াসিন আছে, যা হজমে সহায়তা করে এবং রিবোফ্লাবিন, যা চোখ ও ত্বক ভালো রাখে।
শুধু তাই নয় হিন্দু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরাও গরুর গোশতের উপকারীতা স্বীকার করে নিতে বাধ্য হচ্ছে। সেন্টার ফর সেলুলার অ্যান্ড মলিকিউলার বায়োলজির প্রতিষ্ঠাতা কর্মকর্তা বিজ্ঞানী প্রবীণ পিএম ভার্গব। টাইমস অপ ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে এই খবর দিয়েছে। এ ডাক্তার রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জিকে ৬ নভেম্বর যে চিঠি দিয়েছে, তাতে সে উল্লেখ করেছে গরুর গোশত প্রসঙ্গ। চলমান সংহিতায় একথা উল্লেখ করে বলেছে, 'গ্যাস সমস্যা, অনিয়মিত জ্বর, শুকনো কাশি, ক্লান্তি, কঠোর পরিশ্রমের জন্য অত্যধিক খিদের থেকে শরীরে যাদের ডিসঅর্ডার দেখা দেয়, যারা এই কারণে অত্যধিক রোগা হয়ে যান, তাদের জন্য গরুর গোশত অত্যন্ত উপকারী ঔষধ হিসেবে কাজ করে। - http://bit.ly/2bLIytV

মঙ্গলবার, ৩০ আগস্ট, ২০১৬

দেশী গরুতেই জমছে কুরবানীর হাট

দেশের খবর - ৩১ আগস্ট, ২০১৬
 
দেশী গরুতেই জমছে কুরবানীর হাট
রাজশাহী সংবাদদাতা

: কুরবানীর ঈদকে সামনে রেখে রাজশাহীতে পশুর হাটগুলো জমে উঠতে শুরু করেছে। হাটে আসতে শুরু করেছে গরু-ছাগল। এবারের হাটে দেশী গরুর চাহিদা ও আমদানি দুটোই বেশি। হাটগুলোতে দেশী গরুতে পরিপূর্ণ থাকায় ক্রেতারাও বেশ হাসি খুশি বা সন্তুষ্টি চিত্তে গরু দেখতে আসছেন।
প্রতি বছর রাজশাহীর গোদাগাড়ীর মহিষালবাড়ি, মহানগরীর সিটি হাট, বানেশ্বর, চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনাইচন্ডী, নওগাঁর চৌবাড়িয়া হাট ঈদের অন্তত একমাস আগে থেকে ভারতীয় গরুতে ভরপুর থাকে। তবে এবারই এর ব্যাতিক্রম ঘটছে।
গত এক মাস থেকে ভারত থেকে বিষাক্ত গরু আসার হার একেবারেই কমে গেছে। স্বাভাবিক সময়ে যে হারে গরু আসে এখন তার চেয়েও কম গরু আসছে। ফলে ভারতীয় গরুর আমদানি কমে যাওয়ার সুযোগে দেশী খামারীরা বছরজুড়ে পালিত স্বাস্থ্যবান গরু নিয়ে হাটগুলোয় হাজির হচ্ছেন ভালো লাভের আশায়।
তবে দেশী গবাদি পশু কেনা-বেচায় করিডোর শুল্ক আরোপ করায় শুরুতেই বিপাকে পড়েছেন পশু পালনকারি খামারি ও ব্যবসায়ীরা। গবাদি পশু আমদানি স্থল শুল্ক সেন্টারের (করিডোর) ছাড়পত্র ছাড়া দেশী গরু-মহিষ কেনা-বেচা করাও যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন তারা।
তাদের অভিযোগ, করিডোরের ছাড়পত্র ছাড়া গবাদি পশু বহন করতে গেলে বিজিবি ও কাস্টমসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের কাছে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজশাহী অঞ্চলে ভারত থেকে গবাদি পশু আমদানির নয়টি করিডোরের মধ্যে সবচেয়ে বড় গোদাগাড়ী উপজেলার সুলতানগঞ্জ করিডোর।
এখান দিয়ে গত কয়েক বছর ধরে গবাদি পশু আমদানি হয় না। তবে প্রতিদিন সেখানে ৩০০ থেকে ৩৫০টি দেশি গবাদি পশু করিডোর করা হচ্ছে এখন। এজন্য পশু প্রতি ৫শ’ টাকা করে নেয়া হচ্ছে।
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার মহিষালবাড়ি গ্রামের গরু ব্যবসায়ী জিয়াউল হক বলেন, কুরবানীর হাটে দেশী গরু বিক্রির জন্য ৫শ’ টাকা হারে করিডোরে শুল্ক দিয়ে ছাড়পত্র নিতে হচ্ছে। করিডোরের ছাড়পত্র না থাকলে রাজাবাড়ি চেক পোস্টে বিজিবি গরুগুলো আটকে দিচ্ছে।
তবে গোদাগাড়ীর সুলতানগঞ্জ করিডোরের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা দিদারুন নবী বলেন, দেশী ও ভারতীয় গবাদি পশু আলাদাভাবে চেনার উপায় না থাকায় সীমান্ত এলাকার সকল গরু-মহিষ করিডোর করতে হয়। এতে তাদের করার কিছু নেই।
এমন নানা কারণে স্থানীয় খামারিরা হাটে যে দেশী গরু তুলছেন তার চড়া দাম হাঁকছেন। ফলে ক্রেতারা গরু কিনতে হাটে গেলেও বর্তমানে দাম-দর করেই ফিরে আসছেন। ঈদের সময় এগিয়ে এলে দাম কিছুটা কম হতে পারে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা।
তাই দেশী গরুর আমাদানি বৃদ্ধি এবং লোকজনের সমাগমে রাজশাহীর পশু হাটগুলো জমে উঠতে শুরু করলেও সেভাবে এখনও কেনা-বেচা শুরু হয়নি। সাধারণ ক্রেতারা সময় নিয়ে একটু দর দাম কষেই পছন্দের গরুটি কিনতে চাইছেন।
রাজশাহী মহানগরীর সিটি হাটে কুরবানীর গরু কিনতে গিয়ে শালবাগান এলাকার ব্যবসায়ী সিরাজুল হক বলেন, ভারতীয় গরুর মজুদ কম। আর দেশী গরু উঠলেও বিক্রেতারা অনেক বেশি দাম হাঁকছেন।
যে গরু গত বছর ১৪ থেকে ১৬ হাজার টাকার মধ্যে পাওয়া গেছে, সেই সাইজের গরু এবছর ১৮ থেকে ২০ হাজার টাকার উপরে। ফলে অনেকে হাটে গেলেও দাম শুনে হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরছেন। এতে অনেক মধ্যবিত্ত পরিবারই কুরবানী দিতে পারবে না বলে মন্তব্য করেন তিনি।
কেবল সাধারণ ক্রেতারাই নন, রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকাররা এসেও চড়া দামের কারণে গত কয়েক দিন থেকে গরু দেখেই ফিরে যাচ্ছেন উত্তারাঞ্চলের বৃহত্তম এই হাট থেকে।
গরুর হাটের ইজারাদাররা জানান, কুরবানীর হাটে এখনো তেমন কেনাবেচা শুরু হয়নি। তবে দেশী গরুতে হাট জমতে শুরু করেছে। আগামী সপ্তাহে পশুর আমদানিও যেমন বাড়বে তেমনি কেনাবেচা চলবে পুরোদমে।
রাজশাহী সিটি হাটের ইজারাদার আতিকুর রহমান কালু বলেন, ভারতীয় গরুর আমদানি কম হলেও গতবারের চেয়ে এবার দেশী গরুরই চাহিদা বেশি। খামারিরা প্রতিহাটে গরু নিয়ে হাজির হচ্ছেন। ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, নোয়াখালি, কুমিল্লা, ময়মনসিংহ ও সিরাজগঞ্জের ব্যবসায়ীরা সিটি হাট থেকে গরু নিয়ে যান দেশের বিভিন্ন এলাকায়।
তবে এবার বিক্রেতারা চড়া দাম হাঁকছেন। ফলে তারা ফিরে যাচ্ছেন। এরপরেও আগামী জুমুয়াবারের মধ্যেই পুরোদমে পশু হাট জমে উঠবে বলে মন্তব্য করেন তিনি

কুরবানীর পশুর বর্জ্য বা উচ্ছিষ্ট: সম্ভাবনাময় কোটি কোটি টাকার বাণিজ্য


নিজস্ব প্রতিবেদক:

হাড়-গোড়, খুড়, শিং, লেজ কিংম্বা রক্ত উচ্ছিষ্ট হিসেবে যার স্থান হয় আবর্জনার স্তুপে। কিন্তু কজনই বা জানেন গবাদি পশুর এসব অঙ্গ-প্রতঙ্গের সঙ্গে কোটি কোটি ডলার চলে যাচ্ছে ডাস্টবিনে। হাজারীবাগের কিছু উদ্যোমী মানুষ ময়লার স্তুপ থেকে গবাদি পশুর এসব উচ্ছিষ্ট সংগ্রহ করে বিদেশে রফতানী করছেন।
বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের পাশাপাশি পরিবেশকেও রক্ষা করছেন দূষণের হাত থেকে। পশুর বর্জ্য রফতানীতে সরকারের কাছ থেকে সহায়তা পেলে আরও বেশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব হতো বলে মনে করছেন এর রফতানীকারকরা।
গবাদি পশুর গোশত আর চামড়ার কদর সবার কাছেই কিন্তু এছাড়া বাকি সব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গই ফেলে দেয়া হয় উচ্ছিষ্ট হিসেবে। অথচ এখানে যা উচ্ছিষ্ট সেগুলোই বিদেশিরা কিনে নিচ্ছে উৎকৃষ্ট হিসেবে। এই যেমন পশুর পাকস্থলি একটু ধুয়ে মুছে পরিস্কার করে দিলেই এর দাম হয়ে যাচ্ছে ১০ থেকে ১২ ডলার।
পবিত্র কুরবানীর পশুর হাড় দিয়ে তৈরি হয় জীবনরক্ষাকারী ওষুধ ক্যাপসুলের কভার, নাড়ি দিয়ে অপারেশনের সুতা, রক্ত দিয়ে পাখির খাদ্য, চর্বি দিয়ে সাবান, পায়ের খুর দিয়ে বিভিন্ন প্রকার ক্লিপ ইত্যাদি। অর্থাৎ গরু-খাসীর সব অংশই মানুষের কোনো না কোনো কাজে ব্যবহৃত হয়। পশু জবাইয়ের পর একটি মাঝারি আকারের গরু থেকে ১৫ থেকে ২০ কেজি হাড় ফেলে দেয়া হয়। আর এই হাড় সংগ্রহ করে প্রতিদিন ব্যবসা হয় অন্তত ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকা। নাড়িভুঁড়ি বিক্রি হয় আরো অন্ততঃ ১২ লাখ টাকার। ব্যবসায়ীরা জানান, হাড়গোড় দিয়ে ওষুধ, বোতাম আর ঘর সাজানোর নানা উপকরণ তৈরি হয়। এছাড়া নানা দেশেই খাদ্য হিসেবে ব্যবহার হয় নাড়িভুঁড়ি।
আন্তর্জাতিক বাজারে পিত্ত থলিরও রয়েছে বিশাল চাহিদা। এদিয়ে তৈরি হয় জীবন রক্ষাকারী ঔষধ। অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ থেকেও আসতে পারে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা। কিন্তু সচেতনতার অভাবে এসব চলে যাচ্ছে ডাস্টবিনে।
এর পাশাপাশি হাড়, খুড়, দাঁত, শিং আর রক্ত দিয়ে তৈরি হয় ক্যাপসুলের কভার, জেলোটিন, ক্যামেরার ফিল্ম, সিরিস কাগজ আর পশুপাখির খাবার।
এবার সারা দেশে ১.৫ কোটি পশু কুরবানি হলে প্রতিটি গড়ে ১০ ডলার হিসেবে পাকস্থলি থেকেই অর্জিত হতে পারে প্রায় ১৫ কোটি ডলার।
বাংলাদেশ গোশত ব্যবসায়ী সমিতি এ ব্যাপারে গবেষণা করে বলেছে, কুরবানি ঈদে শুধু ঢাকা শহরেই উৎপাদিত হয় ৩৫ হাজার মেট্রিক টন বর্জ্য। কুরবানির বর্জ্য হলো হাড়, শিং, নাড়িভুঁড়ি, রক্ত-চর্বি, পিত্ত এবং চামড়ার ওয়েস্টেজ অংশ। এসব উচ্ছিষ্ট শতভাগ রফতানিযোগ্য। গরুর হাড় দিয়ে তৈরি হয় জীবন রক্ষাকারী ক্যাপসুলের কভার। নাড়ি দিয়ে তৈরি হয় অপারেশনের সুতা। চর্বি দিয়ে সাবান। এভাবেই পশুবর্জ্য মানুষের কোনো না কোনো কাজে ব্যবহৃত হয়। এগুলো রফতানি করলে শতকোটি টাকা আয় করা সম্ভব শুধু কুরবানি ঈদকেন্দ্রিক।
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট বলছে, কুরবানির বর্জ্য দিয়ে উৎকৃষ্ট জৈব সার তৈরি করা যাবে। দেশে মাটির আশঙ্কাজনক হারে কমে যাওয়া উর্বরতা বাড়াতে ব্যাপক ভূমিকা পালন করতে পারে।
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে পশু উৎপাদন ও ব্যবস্থাপনা বিভাগ বলছে, ছাগল, ভেড়া, মহিষের উচ্ছিষ্টাংশ ব্যবহার করে দেশের পশু ও মৎস্য খাদ্যের প্রোটিন চাহিদা পূরণ করা যেতে পারে। খামারিরা প্রতি কেজি প্রোটিন ৭০ থেকে ৮০ টাকায় আমদানি করছে। অথচ কুরবানিসহ পশুর উচ্ছিষ্ট ও বর্জ্য ব্যবহার করে প্রোটিন উৎপাদন করা সম্ভব। এতে প্রতি কেজি প্রোটিন উৎপাদনে খরচ হবে ৩ থেকে ৪ টাকা।
সংশ্লিষ্টদের মতে, ঠিকমত সংরক্ষণ এবং জনসচেতনা তৈরি করতে পারলে চামড়া শিল্পের মত শুধু পশুবর্জ্য দিয়েই আরেকটি শিল্প দাঁড়িয়ে যেতে পারে।

সাপের বিষেই শতকোটি টাকা !

রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে বেশ কয়েকটি চক্র গোখরো সাপের বিষ (কোবরা ভেনম) চোরাচালান ও কেনাবেচার সাথে জড়িত। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিভিন্ন সময়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে কোবরা ভেনম উদ্ধার করেছে। অনুসন্ধানে জানা যায়, এই সাপের বিষ বাংলাদেশের নয়, এটি ফ্রান্সের রেড ড্রাগন কোম্পানির তৈরি। এই বিষের বোতলের মুখ হাতে খোলা যায় না। বিশেষ এক ধরনের যন্ত্র বা গানের সাহায্যে খুলতে হয়। বোতলের মুখে যে ছিপি তাতে বিশেষ যন্ত্র ঠেকিয়ে ‘ফায়ার’ করলে বোতলের মুখ খুলে যায়। এই গানের সাহায্য ছাড়া কোন ভাবেই বোতলের মুখ খোলা যায় না।
বিশেষজ্ঞদের ধারণা, এই ভেনম চোরাচালানের রুট হিসেবে বাংলাদেশের মাটিকে ব্যবহার করা হয়। ইউরোপের দেশগুলোতে এই বিষ নেশা জাতীয় দ্রব্য হিসেবে ব্যবহৃত হয় এবং বিষ থেকে ওষুধ তৈরি করা হয়।
অনুসন্ধানে জানা যায়, রাজধানী ঢাকার অভিজাত পাড়া হিসেবে পরিচিত গুলশান এলাকায় এই কোবরা ভেনম চোরাচালান ও কেনাবেচার কয়েকটি চক্র রয়েছে।
সম্প্রতি হাতিরঝিলে মধুবাগ ব্রিজের কাছে বসে কথা বলছিলেন এরকমই একটি চক্রের সদস্যরা। পাশ থেকে তাদের কথা শুনে এ প্রতিবেদক তাদের কাছে এগিয়ে গিয়ে নিজের পরিচয় দেন এবং তাদেরকে অভয় দিয়ে কথা বলা শুরু করেন।
তারা এ প্রতিবেদকের মোবাইল ফোন নিয়ে নেন। রেকর্ডিং অন করা আছে কি-না পরীক্ষা করে দেখেন। কথা শেষ না হওয়া পর্যন্ত তারা এ প্রতিবেদকের মোবাইল ফোন নিজেদের কাছে রাখেন। তাদের মোবাইল ফোন নম্বর চাইলেও কেউ দেন নি। এরপর কয়েকবার হাতিরঝিলে গিয়ে আর তাদের পাওয়া যায় নি।
ওই দিন এই চক্রের একজন জানান, তারা কোবরা ভেনম বিক্রির জন্য ঘুরছেন। কিন্তু ছয়টি বোতলের পূর্ণ সেট তাদের কাছে না থাকায় বিক্রি করতে পারছেন না। ক্রেতারা তাদের প্রতি আস্থা রাখতে পারছেন না। কারণ, ছয়টি বোতলের একটি সেট থাকার কথা থাকলেও তাদের কাছে পুরো সেট নেই, আছে চারটি বোতল। এগুলোর মুখ খোলার জন্য বিশেষ যন্ত্র বা গানও তাদের কাছে নেই।
আরেকজন জানান, তারা দিনে অন্য কাজ করেন। কেউ পোশাক কর্মী, কেউ গাড়ির চালক, কেউ জমি কেনাবেচার দালাল হিসেবে কাজ করেন। সন্ধ্যার পর সবাই একসাথে বসেন। তারা জানান, তাদের কাছে যে বিষ রয়েছে তা বিক্রি করতে না পারায় কারো মনেই স্বস্তি নেই। বিষ বিক্রি হলে যে টাকা পাবেন তা দিয়ে জীবনকে নতুনভাবে সাজানোর স্বপ্ন দেখছেন কেউ কেউ। অনেক দিন ধরে ঘুরেও তারা এ বিষ বিক্রি করতে পারছেন না। ফলে দিন যত যাচ্ছে, তাদের হতাশা ততো বাড়ছে। এর ওপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে ধরা পড়ার ভয় তো রয়েছেই।
তারা জানান, তাদের দলে ৪০ থেকে ৫০ জন ছিলো। একজন নারীও রয়েছেন। এটা বিক্রির জন্য কেউ কেউ দুই-একদিন ঘুরেই হতাশ হয়ে পড়েন এবং শেষমেষ এ কাজে আর সময় দেন নি। ফলে বিক্রেতার তালিকা থেকে তার নাম বাদ পড়ে যায়। দিনদিন এই চক্রের সদস্যের সংখ্যাও কমছে।
এই চক্রের একজন জানান, প্রতিসেটের বোতলগুলোর গায়ে সুন্দর নকশা করা। বোতলগুলো দেখলে ঘরে সাজিয়ে রাখতে ইচ্ছে করবে। বোতল গোলাকার। প্রতিটি বোতলে থাকে দুই পাউন্ড করে সাপের বিষ। দুটি বোতলে তরল বিষ থাকে চার পাউন্ড, দুটি বোতলে গুড়া (পাওডার) বিষ থাকে চার পাউন্ড ও দুটি বোতলে দানাদার বিষ থাকে চার পাউন্ড। ছয়টি বোতলে থাকে মোট ১২ পাউন্ড বিষ। তরল বিষের রঙ নীল এবং গুড়া ও দানাদার বিষের রঙ সাদা। ছয়টি বোতলের একসেট বিষের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে প্রায় একশ কোটি টাকা।
যাদের সাথে কথা হয়েছে, তারা কেউই জানেন না এই বিষের বোতল কার কাছে আছে। শুধু জানেন বিক্রির জন্য দরদাম চুড়ান্ত হলে বিষ পাওয়া যাবে।
ফ্রান্সের বিষ কীভাবে বাংলাদেশে এলো- এ প্রশ্ন তাদেরকে করা হলে কেউই সুষ্পষ্ট কিছু বলতে পারেননি। তারা জানান, তারা শুধু বিষের বোতলের ছবি নিয়ে বিক্রির জন্য ক্রেতা খোঁজেন। ক্রেতা পাওয়া গেলে ক্রেতার প্রতিনিধি এবং কোবরা ভেনম বিক্রেতার প্রতিনিধির মধ্যে প্রথমে ছবি দেখাদেখি হয়। এরপর হয় ভিডিও দেখাদেখি। পত্রিকার উপর বিষের বোতল রেখে ছবি তুলতে হয় বা ভিডিও করতে হয় যাতে ভিডিও করার বা ছবি তোলার তারিখ স্পষ্ট দেখা যায়। এ ছাড়া ক্রেতার প্রতিনিধি টাকার নোটের ওপর তারিখ লিখে দেন। সেই নোটটি বোতলের উপর রেখে ভিডিও করে বা ছবি তুলে দেয়া হয়। সেই ছবি বা ভিডিও দেখে ক্রেতার প্রতিনিধি নিশ্চিত হন যে, ওই ব্যক্তির কাছে কোবরা ভেনম আছে।
এরপর বিক্রেতার কাছে চাওয়া হয় ক্যাটালগ। দাম নির্ভর করে ক্যাটালগের উপর। ক্যাটালগে এই বিষ সম্পর্কে বিস্তারিত দেয়া থাকে। ক্যাটালগ না থাকলে বিষ বিক্রি হয় না। কোন ক্রেতা বা বায়ারকেই প্রথমে মূল ক্যাটালগ দেয়া হয় না। ক্যাটালগের রঙিন ফটোকপি দেয়া হয়। এটা দেখে পছন্দ হলে দাম নির্ধারণ হয়।
এরপরের ধাপে হয় স্যাম্পল পরীক্ষা। প্রতিসেট বোতলের সঙ্গে থাকে স্যাম্পল। বায়ার ল্যাবরেটরিতে স্যাম্পল পরীক্ষা করেন। অবশ্য চক্রের সদস্যরা জানান, আমাদের দেশে এই স্যাম্পল পরীক্ষা করার মত কোন ল্যাবরেটরি নেই। স্যাম্পল থাকে শ্যাম্পূর প্যাকেটের মত ছোট প্যাকেটে। স্যাম্পলের কোড নাম্বার এবং মূল বোতলের কোড নাম্বার এক থাকে। মূল বোতলের সেট বুঝে নেওয়ার সময় এই কোড নম্বর মিলিয়ে নেয়া হয়।
চক্রের সদস্যরা জানান, তাদের কাছে থাকা চার বোতলের দাম কোন বায়ারের প্রতিনিধি তিন কোটি, কেউ পাঁচ কোটি বলেছেন। বিক্রি করে দেওয়ার জন্য বায়ারের প্রতিনিধিকে কমিশন দিতে হবে অর্ধেক টাকা। তিনকোটি টাকার মধ্যে অর্ধেক দিলে তাদের জনপ্রতি থাকবে দুই লাখ থেকে তিন লাখ টাকা। অনেক সময় বায়ারের প্রতিনিধি বিভিন্ন তালবাহানা করেন। এ কারণেও তারা বায়ারের প্রতিনিধির প্রতি বিশ্বাস আনতে পারেন না। কারণ, টাকা হাতে পাবেন কি পাবেন না তা নিয়েও থাকে নিশ্চয়তা।
এই বিষ দিয়ে কি হয়- এ প্রশ্ন করা হলে তারা জানান, তারা শুনেছেন দূরারোগ্য ব্যাধির ওষুধ নাকি তৈরি করা হয়।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাসি বিভাগের অধ্যাপক আ ব ম ফারুক জানান, চীন ও তাইওয়ানে আগে নেশার দ্রব্য হিসেবে সাপের বিষ ব্যবহার হতো। সাধারন মাদকদব্যে যাদের কাজ হতো না, তারা সাপের বিষের (তরল করতে করতে মাত্রা কমিয়ে ফেলা) মাত্রা একেবারে কমিয়ে ব্যবহার করতো। চীনে যখন মাও সেতুংয়ের নেতৃত্বে বিপ্লব হয় তখন মাদকদ্রব্যের সব কারখানা ও দোকান পুড়িয়ে দেয়া হয়।
অধ্যাপক আ ব ম ফারুক বলেন, ‘ওই সব এলাকায় কালো বাজারে বিষের এখনো চাহিদা আছে। এ ব্যাপারে আমরা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জায়গা থেকে খবরাখবর পাই।’
তিনি আরো বলেন, ‘ইউরোপে কোন কোন ওষুধ কোম্পানি সাপের বিষ কিনে থাকে। সাপের বিষ খুবই দামি এবং বহনে সুবিধা। বাংলাদেশে এর কোন ব্যবহার নেই। অতো হাই টোকনোলজির ওষুধ কোম্পানি বাংলাদেশে নেই। রেড ড্রাগন কোম্পানির যে কোবরা ভেনম আমাদের দেশে ধরা পড়ে তা এখানে ব্যবহারের জন্য আসে না। বাংলাদেশকে রুট হিসেবে ব্যবহার করে ইউরোপের দেশগুলোতে চোরাচালান হয়ে যায়।’ বিভিন্ন তথ্যে জানা যায়, সর্বশেষ গত ২ আগস্ট চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার নীলমনিগঞ্জের পিটিআই মোড় থেকে প্রায় ১২ কোটি টাকা মূল্যের সাপের বিষসহ মোহাম্মদ সোহেল নামের (৪০) এক ব্যক্তিকে আটক করে বিজিবি। পরে তাকে চুয়াডাঙ্গা থানায় হস্তান্তর করা হয়।
এ ব্যাপারে চুয়াডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তোজাম্মেল হক শনিবার সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের জানান, গ্রেপ্তার মোহাম্মদ সোহেলের কাছ থেকে তেমন কিছ্ ুজানা সম্ভব হয় নি। সে কারাগারে আছে। তাকে রিমান্ডে আনার ব্যাপারে আদালতে আবেদন করা হয়েছে। বিষ পাঠানো হয়েছিলো নমুনা পরীক্ষার জন্য। কিন্তু বিষের বোতলের মুখ খোলা সম্ভব হয় নি। পরে তা র‌্যাবের ফরেনসিক বিভাগে পাঠানোর জন্য আদেশ দিয়েছেন আদালত। সেখানে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।
চলতি বছরের ৭ মার্চ রাজধানীর লালবাগ থানার ইরাকি কবরস্থান মাঠের পশ্চিম পাশে একটি ৪র্থ তলা ভবনের নিচ তলার ফ্ল্যাটে অভিযান চালায় র‌্যাব ১০। এসময় তারা ১২ পাউন্ড সাপের বিষ উদ্ধার করে যার বাজার মূল্য প্রায় ৪৫ কোটি টাকা। এ ছাড়া পাচারকারী চক্রের তিন সদস্যকে অস্ত্রসহ গ্রেফতার করা হয়। এদিন সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে র‌্যাব জানায়, চক্রটি সাপের বিষ বিদেশে পাচার করে আসছিল।
এ ব্যাপারে রোববার বিকেলে র‌্যাব ১০ এর স্কোয়াড কমান্ড (সিপিসি-১) শেখ জিল্লুর রহমান মুঠোফোনে বলেন, ‘আমরা যেটা উদ্ধার করেছিলোম তার প্যাকেট ইনট্যাক্ট ছিলো। গায়ে লেখা ছিলো, মেড ইন ফ্রান্স। এটা কোবরা (গোখরো) সাপের বিষ। নির্দিষ্ট গান ছাড়া জারের মুখ খোলা যায় না। গানের সাহায্যে ফায়ার করলে মুখটা খুলবে।’
এই বিষ ফ্রান্স থেকে আসছে না কি আমাদের দেশে তৈরি হচ্ছে- এ প্রশ্নে এই কর্মকর্তা বলেন, ‘না না, আমাদের দেশে এটা তৈরি হচ্ছে না। কারণ, এই যে জারটা, এই জারটাই তো আমাদের দেশে তৈরি করতে পারবে না।’ এই বিষ দিয়ে কি হয় তা জানা যায় নি বলে জানান র‌্যাবের এই কর্মকর্তা।
এছাড়া ২০১৫ সালের ২৪ জুলাই সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার রাউতগ্রাম থেকে ১২ পাউন্ড গোখরোর বিষ উদ্ধার করে র‌্যাব-৯ এর একটি দল। এ সময় সাতজনকে আটক করা হয়। একটি ক্যাটালগও পাওয়া গিয়েছিলো। উদ্ধার করা বিষের মূল্য ছিলো ৪৬ কোটি টাকা।
২০১৪ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর জয়পুরহাটে একটি আবাসিক হোটেল থেকে ১২ পাউন্ড কোবরার বিষ উদ্ধার করেন র‌্যাব-৫ জয়পুরহাট ক্যাম্পের সদস্যরা। ওই চক্রের ৫ সদস্যকে আটক করা হয়। উদ্ধার করা বিষের মূল্য ৬৮ কোটি টাকা বলে সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছিলো র‌্যাব।
২০১৩ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর উত্তরা থানা এলাকা থেকে ছয় বোতল সাপের বিষ উদ্ধার করে পুলিশ। এই বিষের আনুমানিক মূল্য ১২ কোটি টাকা।
২০১০ সালে মতিঝিল থেকে র‌্যাব সদস্যরা দুই আউন্স সাপের বিষ উদ্ধার করে। ২০০৯ সালের আগস্টে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে একটি আবাসিক হোটেল থেকে ১২ আউন্স সাপের বিষ উদ্ধার করে র‌্যাব। ২০০৮ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি পাবনার ফরিদপুর উপজেলা থেকে ১২ পাউন্ড সাপের বিষ উদ্ধার করে র‌্যাব-১২ এর সদস্যরা। দেশে এরকম বিভিন্ন সময়ে গোখরো সাপের বিষ উদ্ধারের নজির রয়েছে।