রবিবার, ৩ জুলাই, ২০১৬

নামাজরত অবস্থায় তোলা এক মেয়ের সেলফি তো রিতিমত অনলাইনে তোলপাড় অবস্থা

আজকের ষ্ট্যাটাসটি অনেকের খারাপ লাগতে পারে কিন্তু কথাগুলো একটি বার হলেও ভেবে দেখুন আজ আমরা কোন পথে যাচ্ছি
রমজানের শুরুর দিকে নিজের বোনকে কবর দেওয়ার সময় এক ছেলে সেলফি তুলে তা ফেসবুকে আপলোড দিয়েছে !!
.
অবাক হয়েছিলাম.........
.
এইতো সেদিন চাঁদ দেখা কমিটির প্রধান সাহেব এক মডেল অভিনেত্রীর সাথে অত্যন্ত আপত্তিকর ভঙ্গিতে সেলফি তুলেছিলো!
.
গত বছর নামাজরত অবস্থায় তোলা এক মেয়ের সেলফি তো রিতিমত অনলাইনে তোলপাড় অবস্থা।
.
কিছুদিন আগে দেখলাম এক ছেলে তার মায়ের জন্য খোড়া কবরের পাশে দাঁড়িয়ে সেলফি তুলছে!
.
তারও এক ছেলে তার মৃত দাদার লাশের সাথে সেলফি তুলেছিলো...
ক্যাপশন- 'গুড বাই দাদু'
.
কিছু কিছু মানুষ আছে, রমজানের দিনে ইফতার পার্টি করে সেলফি তুলে সেই সেলফি ফেসবুকে আপলোড না দিলে যেন তাদের রোজাই বৃথা।
.
আবার তারাই রমজান মাসে প্রতিদিন ইফতারের আগ মুহূর্তে এত্ত এত্ত গুলা ইফতার আইটেমের ছবি আপলোড করে। দেখে মনে হবে পুরো ইফতারের হাট-বাজার। তাদের এই কাজ থেকে সেহেরীও বাদ যায় না কিন্তু!
.
অনেক মিডিয়া পারসনদের দেখি মাঝেমাঝে ইফতার পার্টির গ্রুপ সেলফি আপলোড করে। দেখে বুঝাই যায় না এটা কি ইফতারের পার্টি, নাকি কোন ফ্যাশন শো। অর্থাৎ, সব জায়গায় বুক উঁচিয়ে আর কোমরে হাত রেখে সেলফি ছবি তুলতেই হবে।
.
প্রতিদিন ইফতারের টাইমে নামী দামী রেস্টুরেন্টে বসে সেলফি আর চেক-ইন দেখতে দেখতে অবস্থা খারাপ....এরা ইফতার করতে যায়, নাকি চেক-ইন দিতে যায় বুঝা মুশকিল!
.
আবার অনেকেই আছে কতিপয় প্রিয় সেলেব্রিটিদের সাথে সেলফি তোলার জন্য মরিয়া। পারলে নিজের প্রানের বিনিময়ে হলেও সেলফি তুলতেই হবে। ফেসবুকে আপলোড দিতেই হবে।
.
ঈদ না আসতেই সুন্দরী আপুদের নতুন জামা পরা সেলফির ভিড়ে তো ফেসবুকেই ঢুকা যায়না!!
.
গতকাল, এক ছেলে মসজিদে মিলাদ পড়তে বসে হুজুরের সাথে সেলফি তুলে নিজেকে ঈমানদার দাবি করতে দেখলাম। আবার সেই ছবিতেই নিজের গার্লফ্রেন্ডকে ট্যাগ করেছে। বুঝেন অবস্থা!
.
এখন আমি যদি বলি ভাইয়া-আপুরা ক্যামেরার ল্যান্সটা এবার একটু অন্য দিকে ঘুরান।
.
এএএই যেমন ধরুন, একজন পথশিশুর হাতে ৩০০/৫০০ টাকা দিয়ে একটা নতুন জামা তুলে দেন। তার সাথেই একটা সেলফি তোলেন।
.
এখানেই শুরু হবে আপত্তি, দান করে দেখাবো কেন? ছবি তুলবো কেন??
.
আরে ভাই ছবি তুলে গ্যালারিতে রাখেন না। মাঝে মাঝে ওই সেলফি দেখে নিজেকে সুখী ব্যাক্তি হিসেবে আবিষ্কার করা তো যাবে!!
.
অথবা, একজন পথশিশু বা গরিব ব্যাক্তিকে নিয়ে কোন রেস্টুরেন্ট ঢুকেন। তাকে নিয়ে একদিন ইফতার/ডিনার করেন। চেক-ইন দেন!
.
......তখনি চেতনায় আঘাত লাগবে, প্রেস্টিজের ব্যাপার চলে আসবে।
.
কিন্তু, মরা ব্যাক্তির পাশে কিংবা কবরের পাশে অথবা বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী স্টাইলে যেখানে সেখানে যখন সেলফি তুলি। আবার সেই ছবিই যখন বেহায়ার মতন ফেসবুকে আপলোড করি, তখন আমাদের বিবেক আর প্রেস্টিজ ভোতা হয়ে যায়।
.
তখন মানবতা/বিবেক/প্রেস্টিজের উপর ইট আর বালুর ট্রাক দাঁড়িয়ে থাকে।
[সংগৃহীত

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন