কথিত আহলে হাদিস গুরু কামালউদ্দিন জাফরির নোংরামির অজানা ইতিহাস।
বিস্তারিতঃ
দ্বিতীয়বারের মত অন্যের
স্ত্রীকে নিয়ে পালিয়ে
চতুর্থবারের মত বিবাহ বন্ধনে
আবদ্ধ হয়েছেন ১৪ সন্তানের জনক
এটিএন বাংলার জনপ্রিয়
ইসলামী অনুষ্ঠানের উপস্থাপক
কামালুদ্দীন জাফরী।
এবার দ্বিতীয়বারের মত অন্যের
স্ত্রীকে ভাগিয়ে নিয়ে
যাওয়ার গুরুতর অভিযোগ ইসলামী
অনুষ্ঠানের জনপ্রিয় টিভি
উপস্থাপক কামালুদ্দীন জাফরীর
বিরুদ্ধে।
এর আগে নিজ বাসায়
ভাড়াটিয়া এক প্রবাসীর
স্ত্রীকে ভাগিয়ে নিয়ে তৃতীয়
স্ত্রী করে নেয়ার ঘটনায়
পত্রিকায় শিরোনাম হয়েছিলেন
কামালুদ্দীন জাফরী। আগে
থেকেই জাফরীর তিন স্ত্রী এবং
মোট ১৪ সন্তান রয়েছে তার ।
এবার চতুর্থ দফায় খবরের
শিরোনাম হলেন তিনি ।
জাফরী জামায়াতে ইসলামীর
বহিষ্কৃত রুকন, বর্তমানে
বাংলাদেশ ইসলামি
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা
এবং ট্রাস্টি বোর্ডের
চেয়ারম্যান। এছাড়া তিনি
জামায়াতের আরেক
প্রভাবশালী নেতা দেলাওয়ারক
হোসাইন সাঈদীর বেয়াই।
সাঈদীর ছেলের সঙ্গে জাফরীর
মেয়ের বিয়ে হয়েছে। বেয়াই
পরিবারও জাফরীর সঙ্গে সম্পর্ক
ছিন্ন করেছে।
একটি জনপ্রিয় অনলাইন নিউজের
অনুসন্ধানে জানা গেছে, দুই
সন্তানসহ ওই নারীকে তিনি
মিশরের রাজধানী কায়রোতে
নিয়ে রেখেছেন।
এবার নওশীন আলম (৩৩) নামে যে
নারীকে জাফরী (৭৩) ভাগিয়ে
নিয়ে গেছেন তিনি তারই
সাবেক ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস)
এবং ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের
ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের
শিক্ষক আব্দুল মতিনের স্ত্রী।
অভিযোগকারী আব্দুল মতিন
বর্তমানে ইউরোপের দেশ
অস্ট্রিয়ার একটি মসজিদে
ইমামতি করেন।
আব্দুল মতিন তার স্ত্রী ও দুই
সন্তানকে ভাগিয়ে নিয়ে
যাওয়ার বিষয়ে গত ২৫
ফেব্রুয়ারি সেন্ট্রাল শরিয়াহ
বোর্ড ফর ইসলামি ব্যাংকস অব
বাংলাদেশ এর নির্বাহী
কমিটির চেয়ারম্যান ও
সেক্রেটারি জেনারেলের
কাছে লিখিত অভিযোগ
দিয়েছেন।
জাফরী সেন্ট্রাল শরিয়াহ
বোর্ডের চেয়ারম্যান। তার
নৈতিক স্খলনের তদন্ত এবং
শরিয়া বোর্ড থেকে
বহিষ্কারের আবেদন করা হয়েছে
অভিযোগপত্রে। যেসব ব্যাংক
সেন্ট্রাল শরিয়াহ বোর্ডের সদস্য
তাদেরও লিখিত অভিযোগ
দিয়েছেন মতিন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে
চাইলে তিনি বলেন,
বাংলাদেশ ইসলামি
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক
স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক
হিসেবে ২০০৭ সালে যোগ দেই।
একই সঙ্গে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের
প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি বোর্ডের
চেয়ারম্যান জাফরীর ব্যক্তিগত
সহকারী হিসেবে নিয়োগ পাই।
২০১৩ সাল পর্যন্ত শিক্ষকতা করি।
এর মধ্যে ২০১২ সালে ৬ মাসের
ছুটি নিয়ে যুক্তরাজ্যে যাই।
আমার অনুপস্থিতির সুযোগে
আমার স্ত্রী নওশীন আলমকে
সৌদি আরবের মদিনা ইসলামী
বিশ্ববিদ্যালয়ে স্কলারশিপ
নিয়ে দেয়ার পাশাপাশি
বিনা খরচে সৌদিতে নিয়ে
যাওয়া এবং মক্কায় মুসলিম
ওয়ার্ল্ড লিগে (রাবেতা আলমে
ইসলামি) চাকরি দেয়ার প্রলোভন
দেখিয়ে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে
তোলেন জাফরী।
হাতিরঝিল
এলাকায় অর্ধলক্ষ টাকা মাসিক
ভাড়া বাসায় নওশীনকে নিয়ে
রাতযাপন করতেন। আমার বাসা
ছিল এর খুব কাছাকাছি দক্ষিণ
বনশ্রীতে, যেখানে তিন
সন্তানসহ আমার স্ত্রী থাকতো।
অথচ কামালুদ্দিন জাফরীর তিন
স্ত্রী এবং ১৪ সন্তান রয়েছে।
মতিন আরো জানান, ২০১৪ সালের
নভেম্বর মাসের শেষ দিকে
বাংলাদেশে আসেন। স্ত্রী-
সন্তানদের অস্ট্রিয়ায় নিয়ে
যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু
ইউরোপ যাওয়ার ১০ দিন আগে
অর্থাৎ ২০১৪ সালের ২৮ ডিসেম্বর
জাফরীর এক ঘনিষ্টজন মতিনকে
ফোন করে জানান, নওশীনকে
জাফরী গতকাল (২৭ ডিসেম্বর)
বিয়ে করেছেন। এ কথা শুনে
তিনি হতবাক হয়ে যান। কারণ,
জাফরী তার বাবার বয়সী। আর
নওশীনের সাথে তাদের বিবাহ
বিচ্ছেদও হয়নি। তাৎক্ষণিকভাবে
স্ত্রীকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস
করলে তিনি অস্বীকার করেন।
এরপর ২০১৫ সালের ৭ জানুয়ারি
মতিন স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে
অস্ট্রিয়ায় ভিয়েনায় তার
কর্মস্থলে চলে যান। এর আগে ২
জানুয়ারি উভয় পরিবারের
উপস্থিতিতে স্বামীর অনুগত
থাকা এবং জাফরীর সঙ্গে
যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করার শর্তে
এক অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর
করেন নওশীন। সেই স্ট্যাম্পের
কপিও দেখিয়েছেন মতিন। কিন্তু
সেখানে যাওয়ার পর থেকেই
প্রতিদিন নওশীনের সঙ্গে
জাফরীর ফোনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা
কথা হতো।
মতিন দাবি করেন, কামালুদ্দিন
জাফরী তাকে হত্যা করার জন্য
অথবা সন্ত্রাসী অপবাদ দিয়ে
ইউরোপীয় পুলিশে সোপর্দ করার
জন্য নওশীনের সঙ্গে যোগসাজশ
করেন।
অস্ট্রিয়া যাওয়ার এক সপ্তাহরে
মাথায় জাফরীর সঙ্গে
ফোনালাপের এক পর্যায়ে
নওশীন বাসার ড্রয়িং রুমের
জানালা খুলে চিৎকার করতে
থাকে। প্রতিবেশীরা পুলিশকে
ফোন করে। পুলিশ এলে নওশীন
দরজা খুলে দেন এবং তাদের
বলেন, তার স্বামী একজন
সন্ত্রাসী, তাকে ধরে নিয়ে
যান। ইউরোপের একজন ইমামকে
সন্ত্রাসী বলায় পুলিশ হাসি
দিয়ে, ইউরোপের আইন মেনে
চলার জন্য নওশীনকে পরামর্শ
দিয়ে চলে যায়।
এর ঠিক এক সপ্তাহ পর আবারও দরজা
খুলে চিৎকার শুরু করেন নওশীন।
এবারও প্রতিবেশীরা পুলিশে
ফোন দিলে পুলিশ এসে মতিন,
নওশীন এবং এক প্রতিবেশীকে
থানায় নিয়ে যায়। থানায়
নিয়ে পৃথক পৃথকভাবে তাদেরকে
জিজ্ঞাসাবাদ করে।
পুলিশ নিশ্চিত হয়, নওশীন তার
স্বামীকে হত্যা অথবা
সন্ত্রাসের অপবাদ দিয়ে পুলিশে
সোপর্দ করার জন্য তৃতীয় কোনো
ব্যক্তির হুকুম তালিম করছে।
এই কারণে ২০১৫ সালের ২৪
জানুয়ারি দিবাগত রাত ১টায় দুই
সপ্তাহের জন্য নওশীনকে
গ্রেপ্তার করে ভিয়েনা পুলিশ
তাকে অ্যাগ্রেসিভ নারী
সেলে পাঠায়। এই সময় জাফরীর
সঙ্গে কয়েকবার মোবাইলে কথা
বলেন নওশীন। এছাড়া জেলে
থাকা অবস্থায় কয়েকশবার তারা
কথা বলেছেন। ওই কথোপকথনের
কললিস্ট রের্কড অস্ট্রিয়ার টি-
মোবাইল কোম্পানি থেকে
সংগ্রহ করা হয়।
এদিকে জাফরী ভিয়েনায়
বসবাসকারী তার আত্মীয়-
স্বজনের মাধ্যমে নওশীনকে
ছাড়িয়ে আনার ব্যবস্থা করে।
জেল থেকে ছাড়িয়ে আনার পর
৩১ জানুয়ারি ভিয়েনা থেকে
রওনা দিয়ে ১ ফেব্রুয়ারি নওশীন
ছোট দুই সন্তানসহ বাংলাদেশে
চলে আসেন। মতিন দাবি করেন,
তাদের বিমানের টিকিটের
টাকাটাও তিনি দিয়েছেন।
আব্দুল মতিন বলেন, পহেলা
ফেরুয়ারি তারা দেশে ফেরে।
এই কেলেঙ্কারি যাতে ফাঁস না
হয়, সংবাদ মাধ্যম এবং আইন
শৃঙ্খলা বাহিনীর নাগালের
বাইরে রাখার জন্য ওই মাসের
শেষের দিকে সৌদি আরবের
ভিসা নিয়ে নওশীন আলমসহ দুই
শিশু সন্তানকে (জাওদান ও
আফনানকে) ‘অপহরণ’ করে সৌদি
আরব নিয়ে যান জাফরী।
সৌদি আরবে যেসব দাতা
জাকাত-সদকার বিপুল টাকা পয়সা
জাফরীকে দিতেন তাদেরকে
বিষয়টি অবহিত করেন মতিন।
সৌদি আরবে জিনা
ব্যাভিচারের শাস্তি অত্যন্ত
কঠোর হওয়ায় জাফরী তাড়াহুড়া
করে নওশীন ও দুই সন্তানকে
বাংলাদেশে নিয়ে আসেন।
এরপর তড়িঘড়ি করে ২০১৫ সালের
মার্চের শেষের দিকে মিশরের
রাজধানী কায়রোতে নিয়ে
যান। বর্তমানে তারা
কায়রোতেই আছেন। সেখানে
জাফরী তার ঘনিষ্ট দুই ব্যক্তির
জিম্মায় নওশীন আলমকে
রেখেছেন। মাঝে মাঝে
সেখানে যান জাফরী। দু’জনকে
বিভিন্ন এলাকায় ঘুরতে দেখা
গেছে।
মতিন অভিযোগ করে বলেন,
জাফরীর পরামর্শে এবং ফাঁদে
পড়ে নিকাহনামা জালিয়াতি
করে আমার স্ত্রী, দুই শিশু
সন্তানকে জাফরী বাংলাদেশ
থেকে প্রথমে সৌদি এবং পরে
মিশরে অপহরণ করে নিয়ে
গেছেন।
জাফরীর কি আপনার স্ত্রীকে
বিয়ে করে নিয়ে গেছে এই প্রশ্ন
করলে আব্দুল মতিন প্রতিবেদককে
বলেন, নওশীন এখনও আমার স্ত্রী।
আমি তাকে তালাক দেইনি।
স্ত্রীও আমাকে তালাক দেয়নি।
তাহলে উনি কীভাবে বিয়ে
করলেন? আমাদের তিন সন্তান
আছে। একটি সন্তান আমার সঙ্গে
অস্ট্রিয়ায় থাকে। ছোট দুই সন্তান
মায়ের কাছে।
তাহলে কেন আইনের আশ্রয়
নিচ্ছে না এই প্রশ্নে মতিন বলেন,
কামালুদ্দিন জাফরীর
বাংলাদেশের
নেতানেত্রীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক
থাকায় তারা প্রভাব বিস্তার
করতে পারে। ইতিমধ্যে আমার
ভাই থানায় একটি সাধারণ
ডায়েরিও (জিডি) করেছেন।
আমি খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে আইনের
আশ্রয় নিবো।
এদিকে নাম প্রকাশ না করার
শর্তে ইসলামী ব্যাংকের এক
শীর্ষ কর্মকর্তা বলেছেন,
কামালুদ্দিন জাফরী একজন
প্রবাসীর স্ত্রীকে ভাগিয়ে
নেয়াসহ নানা অনৈতিক
কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ায় ওই সময়
ইসলামী ব্যাংকের শরিয়া
বোর্ড থেকে তাকে অব্যাহতি
দেয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, নানা
অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত
থাকার কারণে জামায়াতের
রুকন পদ থেকেও তাকে অব্যাহতি
দেয়া হয়েছে। সূত্রটি দাবি
করে, যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে
যখন দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী
আটক হন, একই সময় জাফরীও আটক হন।
তবে পরে তাকে ছেড়ে দেয়া
হয়েছে।
এদিকে গত ২০ জানুয়ারি সরকার
দলীয় এক সংসদ সদস্য অগ্রণী
ব্যাংককে ‘সেন্ট্রাল শরীয়া
বোর্ড’র সদস্য পদ পরিত্যাগ করার
পরামর্শ দিয়ে ওই ব্যাংকের
চেয়ারম্যানের কাছে চিঠি
দেন। তিনি ওই চিঠিতে বলেন,
জাফরী চাঞ্চল্যকর নুরুল ইসলাম
ফারুকী হত্যা মামলার একজন
তালিকাভুক্ত আসামি। ব্যক্তিগত
সহকারীর স্ত্রীকে ফুসলিয়ে চতুর্থ
স্ত্রী গ্রহণ করার মতো ভয়াবহ
অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
তার বাসার ভাড়াটিয়া
হিসেবে বসবাসকারী একজন
প্রবাসীর স্ত্রীকে তৃতীয় স্ত্রী
হিসেবে গ্রহণ করার কারণে
ইসলামী ব্যাংকের শরিয়া
বোর্ডের সদস্য সচিব পদ থেকে
তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
এই অভিযোগসহ বিভিন্ন
অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে, গত
৯ মার্চ অগ্রণী ব্যাংক
বাংলাদেশ লিমিটেডের ১৮তম
সভায় সর্বসম্মতিক্রমে সেন্ট্রাল
শরিয়া বোর্ড থেকে নিজেদের
সদস্য পদ প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত
নেয়।
অনলাইন নিউজ পোর্টাল
বাংলামেইল২৪ এর অনুসন্ধান ও
প্রকাশিত সংবাদ সুত্রে জানা
গেছে, সংশ্লিষ্ট সূত্র দাবি
করেছে, সৌদি আরব, যুক্তরাজ্য,
কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, কুয়েত,
কাতারসহ বিভিন্ন দেশ থেকে
এতিম গরীবদের নামে বিপুল
পরিমান যাকাত ও সদকার টাকা
প্রতিমাসে পেয়ে থাকেন
কামালুদ্দিন জাফরী। এর
সিংহভাগই তিনি ফূর্তি করে
উড়িয়ে দেন।
নরসিংদীতে জামেয়া
কাসেমিয়া মাদরাসা এবং
ঢাকাস্থ ইসলামী
বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে বিদেশ
থেকে কোটি কোটি টাকা এনে
নিজের অ্যাকাউন্ট এবং বিভিন্ন
নামে ব্যাংকে রাখেন
জাফরী। যার হিসাব-নিকাশ
কখনোই দিতে পারেননি। এই দুই
প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদজ এই
টাকা পয়সার হিসাব চাওয়ার
সাহসও পায় না
।
।
লিংকঃ
১। http://www.somoyerkonthosor.com/archives/370869
২। https://mobile.facebook.com/KamaluddinZafree?sectionLoadingID=m_timeline_loading_div_1459493999_0_36_timeline_unit%3A1%3A00000000001436725682%3A04611686018427387904%3A09223372036854775798%3A04611686018427387904&unit_cursor=timeline_unit%3A1%3A00000000001436725682%3A04611686018427387904%3A09223372036854775798%3A04611686018427387904&timeend=1459493999×tart=0&tm=AQDXdN99pqWfnP2E&refid=17
.
৩। https://m.youtube.com/watch?v=VoE5P_eEzV8
.
বিস্তারিতঃ
দ্বিতীয়বারের মত অন্যের
স্ত্রীকে নিয়ে পালিয়ে
চতুর্থবারের মত বিবাহ বন্ধনে
আবদ্ধ হয়েছেন ১৪ সন্তানের জনক
এটিএন বাংলার জনপ্রিয়
ইসলামী অনুষ্ঠানের উপস্থাপক
কামালুদ্দীন জাফরী।
এবার দ্বিতীয়বারের মত অন্যের
স্ত্রীকে ভাগিয়ে নিয়ে
যাওয়ার গুরুতর অভিযোগ ইসলামী
অনুষ্ঠানের জনপ্রিয় টিভি
উপস্থাপক কামালুদ্দীন জাফরীর
বিরুদ্ধে।
এর আগে নিজ বাসায়
ভাড়াটিয়া এক প্রবাসীর
স্ত্রীকে ভাগিয়ে নিয়ে তৃতীয়
স্ত্রী করে নেয়ার ঘটনায়
পত্রিকায় শিরোনাম হয়েছিলেন
কামালুদ্দীন জাফরী। আগে
থেকেই জাফরীর তিন স্ত্রী এবং
মোট ১৪ সন্তান রয়েছে তার ।
এবার চতুর্থ দফায় খবরের
শিরোনাম হলেন তিনি ।
জাফরী জামায়াতে ইসলামীর
বহিষ্কৃত রুকন, বর্তমানে
বাংলাদেশ ইসলামি
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা
এবং ট্রাস্টি বোর্ডের
চেয়ারম্যান। এছাড়া তিনি
জামায়াতের আরেক
প্রভাবশালী নেতা দেলাওয়ারক
হোসাইন সাঈদীর বেয়াই।
সাঈদীর ছেলের সঙ্গে জাফরীর
মেয়ের বিয়ে হয়েছে। বেয়াই
পরিবারও জাফরীর সঙ্গে সম্পর্ক
ছিন্ন করেছে।
একটি জনপ্রিয় অনলাইন নিউজের
অনুসন্ধানে জানা গেছে, দুই
সন্তানসহ ওই নারীকে তিনি
মিশরের রাজধানী কায়রোতে
নিয়ে রেখেছেন।
এবার নওশীন আলম (৩৩) নামে যে
নারীকে জাফরী (৭৩) ভাগিয়ে
নিয়ে গেছেন তিনি তারই
সাবেক ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস)
এবং ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের
ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের
শিক্ষক আব্দুল মতিনের স্ত্রী।
অভিযোগকারী আব্দুল মতিন
বর্তমানে ইউরোপের দেশ
অস্ট্রিয়ার একটি মসজিদে
ইমামতি করেন।
আব্দুল মতিন তার স্ত্রী ও দুই
সন্তানকে ভাগিয়ে নিয়ে
যাওয়ার বিষয়ে গত ২৫
ফেব্রুয়ারি সেন্ট্রাল শরিয়াহ
বোর্ড ফর ইসলামি ব্যাংকস অব
বাংলাদেশ এর নির্বাহী
কমিটির চেয়ারম্যান ও
সেক্রেটারি জেনারেলের
কাছে লিখিত অভিযোগ
দিয়েছেন।
জাফরী সেন্ট্রাল শরিয়াহ
বোর্ডের চেয়ারম্যান। তার
নৈতিক স্খলনের তদন্ত এবং
শরিয়া বোর্ড থেকে
বহিষ্কারের আবেদন করা হয়েছে
অভিযোগপত্রে। যেসব ব্যাংক
সেন্ট্রাল শরিয়াহ বোর্ডের সদস্য
তাদেরও লিখিত অভিযোগ
দিয়েছেন মতিন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে
চাইলে তিনি বলেন,
বাংলাদেশ ইসলামি
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক
স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক
হিসেবে ২০০৭ সালে যোগ দেই।
একই সঙ্গে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের
প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি বোর্ডের
চেয়ারম্যান জাফরীর ব্যক্তিগত
সহকারী হিসেবে নিয়োগ পাই।
২০১৩ সাল পর্যন্ত শিক্ষকতা করি।
এর মধ্যে ২০১২ সালে ৬ মাসের
ছুটি নিয়ে যুক্তরাজ্যে যাই।
আমার অনুপস্থিতির সুযোগে
আমার স্ত্রী নওশীন আলমকে
সৌদি আরবের মদিনা ইসলামী
বিশ্ববিদ্যালয়ে স্কলারশিপ
নিয়ে দেয়ার পাশাপাশি
বিনা খরচে সৌদিতে নিয়ে
যাওয়া এবং মক্কায় মুসলিম
ওয়ার্ল্ড লিগে (রাবেতা আলমে
ইসলামি) চাকরি দেয়ার প্রলোভন
দেখিয়ে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে
তোলেন জাফরী।
হাতিরঝিল
এলাকায় অর্ধলক্ষ টাকা মাসিক
ভাড়া বাসায় নওশীনকে নিয়ে
রাতযাপন করতেন। আমার বাসা
ছিল এর খুব কাছাকাছি দক্ষিণ
বনশ্রীতে, যেখানে তিন
সন্তানসহ আমার স্ত্রী থাকতো।
অথচ কামালুদ্দিন জাফরীর তিন
স্ত্রী এবং ১৪ সন্তান রয়েছে।
মতিন আরো জানান, ২০১৪ সালের
নভেম্বর মাসের শেষ দিকে
বাংলাদেশে আসেন। স্ত্রী-
সন্তানদের অস্ট্রিয়ায় নিয়ে
যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু
ইউরোপ যাওয়ার ১০ দিন আগে
অর্থাৎ ২০১৪ সালের ২৮ ডিসেম্বর
জাফরীর এক ঘনিষ্টজন মতিনকে
ফোন করে জানান, নওশীনকে
জাফরী গতকাল (২৭ ডিসেম্বর)
বিয়ে করেছেন। এ কথা শুনে
তিনি হতবাক হয়ে যান। কারণ,
জাফরী তার বাবার বয়সী। আর
নওশীনের সাথে তাদের বিবাহ
বিচ্ছেদও হয়নি। তাৎক্ষণিকভাবে
স্ত্রীকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস
করলে তিনি অস্বীকার করেন।
এরপর ২০১৫ সালের ৭ জানুয়ারি
মতিন স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে
অস্ট্রিয়ায় ভিয়েনায় তার
কর্মস্থলে চলে যান। এর আগে ২
জানুয়ারি উভয় পরিবারের
উপস্থিতিতে স্বামীর অনুগত
থাকা এবং জাফরীর সঙ্গে
যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করার শর্তে
এক অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর
করেন নওশীন। সেই স্ট্যাম্পের
কপিও দেখিয়েছেন মতিন। কিন্তু
সেখানে যাওয়ার পর থেকেই
প্রতিদিন নওশীনের সঙ্গে
জাফরীর ফোনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা
কথা হতো।
মতিন দাবি করেন, কামালুদ্দিন
জাফরী তাকে হত্যা করার জন্য
অথবা সন্ত্রাসী অপবাদ দিয়ে
ইউরোপীয় পুলিশে সোপর্দ করার
জন্য নওশীনের সঙ্গে যোগসাজশ
করেন।
অস্ট্রিয়া যাওয়ার এক সপ্তাহরে
মাথায় জাফরীর সঙ্গে
ফোনালাপের এক পর্যায়ে
নওশীন বাসার ড্রয়িং রুমের
জানালা খুলে চিৎকার করতে
থাকে। প্রতিবেশীরা পুলিশকে
ফোন করে। পুলিশ এলে নওশীন
দরজা খুলে দেন এবং তাদের
বলেন, তার স্বামী একজন
সন্ত্রাসী, তাকে ধরে নিয়ে
যান। ইউরোপের একজন ইমামকে
সন্ত্রাসী বলায় পুলিশ হাসি
দিয়ে, ইউরোপের আইন মেনে
চলার জন্য নওশীনকে পরামর্শ
দিয়ে চলে যায়।
এর ঠিক এক সপ্তাহ পর আবারও দরজা
খুলে চিৎকার শুরু করেন নওশীন।
এবারও প্রতিবেশীরা পুলিশে
ফোন দিলে পুলিশ এসে মতিন,
নওশীন এবং এক প্রতিবেশীকে
থানায় নিয়ে যায়। থানায়
নিয়ে পৃথক পৃথকভাবে তাদেরকে
জিজ্ঞাসাবাদ করে।
পুলিশ নিশ্চিত হয়, নওশীন তার
স্বামীকে হত্যা অথবা
সন্ত্রাসের অপবাদ দিয়ে পুলিশে
সোপর্দ করার জন্য তৃতীয় কোনো
ব্যক্তির হুকুম তালিম করছে।
এই কারণে ২০১৫ সালের ২৪
জানুয়ারি দিবাগত রাত ১টায় দুই
সপ্তাহের জন্য নওশীনকে
গ্রেপ্তার করে ভিয়েনা পুলিশ
তাকে অ্যাগ্রেসিভ নারী
সেলে পাঠায়। এই সময় জাফরীর
সঙ্গে কয়েকবার মোবাইলে কথা
বলেন নওশীন। এছাড়া জেলে
থাকা অবস্থায় কয়েকশবার তারা
কথা বলেছেন। ওই কথোপকথনের
কললিস্ট রের্কড অস্ট্রিয়ার টি-
মোবাইল কোম্পানি থেকে
সংগ্রহ করা হয়।
এদিকে জাফরী ভিয়েনায়
বসবাসকারী তার আত্মীয়-
স্বজনের মাধ্যমে নওশীনকে
ছাড়িয়ে আনার ব্যবস্থা করে।
জেল থেকে ছাড়িয়ে আনার পর
৩১ জানুয়ারি ভিয়েনা থেকে
রওনা দিয়ে ১ ফেব্রুয়ারি নওশীন
ছোট দুই সন্তানসহ বাংলাদেশে
চলে আসেন। মতিন দাবি করেন,
তাদের বিমানের টিকিটের
টাকাটাও তিনি দিয়েছেন।
আব্দুল মতিন বলেন, পহেলা
ফেরুয়ারি তারা দেশে ফেরে।
এই কেলেঙ্কারি যাতে ফাঁস না
হয়, সংবাদ মাধ্যম এবং আইন
শৃঙ্খলা বাহিনীর নাগালের
বাইরে রাখার জন্য ওই মাসের
শেষের দিকে সৌদি আরবের
ভিসা নিয়ে নওশীন আলমসহ দুই
শিশু সন্তানকে (জাওদান ও
আফনানকে) ‘অপহরণ’ করে সৌদি
আরব নিয়ে যান জাফরী।
সৌদি আরবে যেসব দাতা
জাকাত-সদকার বিপুল টাকা পয়সা
জাফরীকে দিতেন তাদেরকে
বিষয়টি অবহিত করেন মতিন।
সৌদি আরবে জিনা
ব্যাভিচারের শাস্তি অত্যন্ত
কঠোর হওয়ায় জাফরী তাড়াহুড়া
করে নওশীন ও দুই সন্তানকে
বাংলাদেশে নিয়ে আসেন।
এরপর তড়িঘড়ি করে ২০১৫ সালের
মার্চের শেষের দিকে মিশরের
রাজধানী কায়রোতে নিয়ে
যান। বর্তমানে তারা
কায়রোতেই আছেন। সেখানে
জাফরী তার ঘনিষ্ট দুই ব্যক্তির
জিম্মায় নওশীন আলমকে
রেখেছেন। মাঝে মাঝে
সেখানে যান জাফরী। দু’জনকে
বিভিন্ন এলাকায় ঘুরতে দেখা
গেছে।
মতিন অভিযোগ করে বলেন,
জাফরীর পরামর্শে এবং ফাঁদে
পড়ে নিকাহনামা জালিয়াতি
করে আমার স্ত্রী, দুই শিশু
সন্তানকে জাফরী বাংলাদেশ
থেকে প্রথমে সৌদি এবং পরে
মিশরে অপহরণ করে নিয়ে
গেছেন।
জাফরীর কি আপনার স্ত্রীকে
বিয়ে করে নিয়ে গেছে এই প্রশ্ন
করলে আব্দুল মতিন প্রতিবেদককে
বলেন, নওশীন এখনও আমার স্ত্রী।
আমি তাকে তালাক দেইনি।
স্ত্রীও আমাকে তালাক দেয়নি।
তাহলে উনি কীভাবে বিয়ে
করলেন? আমাদের তিন সন্তান
আছে। একটি সন্তান আমার সঙ্গে
অস্ট্রিয়ায় থাকে। ছোট দুই সন্তান
মায়ের কাছে।
তাহলে কেন আইনের আশ্রয়
নিচ্ছে না এই প্রশ্নে মতিন বলেন,
কামালুদ্দিন জাফরীর
বাংলাদেশের
নেতানেত্রীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক
থাকায় তারা প্রভাব বিস্তার
করতে পারে। ইতিমধ্যে আমার
ভাই থানায় একটি সাধারণ
ডায়েরিও (জিডি) করেছেন।
আমি খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে আইনের
আশ্রয় নিবো।
এদিকে নাম প্রকাশ না করার
শর্তে ইসলামী ব্যাংকের এক
শীর্ষ কর্মকর্তা বলেছেন,
কামালুদ্দিন জাফরী একজন
প্রবাসীর স্ত্রীকে ভাগিয়ে
নেয়াসহ নানা অনৈতিক
কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ায় ওই সময়
ইসলামী ব্যাংকের শরিয়া
বোর্ড থেকে তাকে অব্যাহতি
দেয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, নানা
অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত
থাকার কারণে জামায়াতের
রুকন পদ থেকেও তাকে অব্যাহতি
দেয়া হয়েছে। সূত্রটি দাবি
করে, যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে
যখন দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী
আটক হন, একই সময় জাফরীও আটক হন।
তবে পরে তাকে ছেড়ে দেয়া
হয়েছে।
এদিকে গত ২০ জানুয়ারি সরকার
দলীয় এক সংসদ সদস্য অগ্রণী
ব্যাংককে ‘সেন্ট্রাল শরীয়া
বোর্ড’র সদস্য পদ পরিত্যাগ করার
পরামর্শ দিয়ে ওই ব্যাংকের
চেয়ারম্যানের কাছে চিঠি
দেন। তিনি ওই চিঠিতে বলেন,
জাফরী চাঞ্চল্যকর নুরুল ইসলাম
ফারুকী হত্যা মামলার একজন
তালিকাভুক্ত আসামি। ব্যক্তিগত
সহকারীর স্ত্রীকে ফুসলিয়ে চতুর্থ
স্ত্রী গ্রহণ করার মতো ভয়াবহ
অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
তার বাসার ভাড়াটিয়া
হিসেবে বসবাসকারী একজন
প্রবাসীর স্ত্রীকে তৃতীয় স্ত্রী
হিসেবে গ্রহণ করার কারণে
ইসলামী ব্যাংকের শরিয়া
বোর্ডের সদস্য সচিব পদ থেকে
তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
এই অভিযোগসহ বিভিন্ন
অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে, গত
৯ মার্চ অগ্রণী ব্যাংক
বাংলাদেশ লিমিটেডের ১৮তম
সভায় সর্বসম্মতিক্রমে সেন্ট্রাল
শরিয়া বোর্ড থেকে নিজেদের
সদস্য পদ প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত
নেয়।
অনলাইন নিউজ পোর্টাল
বাংলামেইল২৪ এর অনুসন্ধান ও
প্রকাশিত সংবাদ সুত্রে জানা
গেছে, সংশ্লিষ্ট সূত্র দাবি
করেছে, সৌদি আরব, যুক্তরাজ্য,
কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, কুয়েত,
কাতারসহ বিভিন্ন দেশ থেকে
এতিম গরীবদের নামে বিপুল
পরিমান যাকাত ও সদকার টাকা
প্রতিমাসে পেয়ে থাকেন
কামালুদ্দিন জাফরী। এর
সিংহভাগই তিনি ফূর্তি করে
উড়িয়ে দেন।
নরসিংদীতে জামেয়া
কাসেমিয়া মাদরাসা এবং
ঢাকাস্থ ইসলামী
বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে বিদেশ
থেকে কোটি কোটি টাকা এনে
নিজের অ্যাকাউন্ট এবং বিভিন্ন
নামে ব্যাংকে রাখেন
জাফরী। যার হিসাব-নিকাশ
কখনোই দিতে পারেননি। এই দুই
প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদজ এই
টাকা পয়সার হিসাব চাওয়ার
সাহসও পায় না
।
।
লিংকঃ
১। http://www.somoyerkonthosor.com/archives/370869
২। https://mobile.facebook.com/KamaluddinZafree?sectionLoadingID=m_timeline_loading_div_1459493999_0_36_timeline_unit%3A1%3A00000000001436725682%3A04611686018427387904%3A09223372036854775798%3A04611686018427387904&unit_cursor=timeline_unit%3A1%3A00000000001436725682%3A04611686018427387904%3A09223372036854775798%3A04611686018427387904&timeend=1459493999×tart=0&tm=AQDXdN99pqWfnP2E&refid=17
.
৩। https://m.youtube.com/watch?v=VoE5P_eEzV8
.
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন