বাংলাদেশে পহেলা বৈশাখের উৎপত্তিঃ
আজ থাকবে কারা সৃষ্টি করলো আজকের পহেলা বৈশাখ ??
অনেকেই ভেবে থাকেন, পহেলা বৈশাখ মনে হয় অনেক আগে থেকেই জাতীয় উৎসব, এটা ভুল। আগে পহেলা বৈশাখের কোন অস্তিত্বই ছিলো না, গ্রামগঞ্জে যা ছিলো তা হচ্ছে চৈত্রসংক্রান্তী পূজার মেলা। পহেলা বৈশাখকে জাতীয় উৎসব করার প্রথম স্বপ্ন দেখে সংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানটের কয়েকজন সদস্য।
এখানে সংস্কৃতিক সংগঠন ‘ছায়ানট’ সম্পর্কে কিছু বলার দরকার। পাকিস্তান আমলে পাকিস্তান সরকার পূর্ব পাকিস্তানে রবীন্দ্র চর্চার ঘোর বিরোধী ছিলো। এর কারণ হিসেবে দুটি যুক্তি ছিলো তাদের:
১) রবীন্দ্রনাথ ভারতীয় উগ্র জাতীয়তাবাদী কবি,
২) রবীন্দ্রনাথের অনেক মুসলিম বিরোধী সাম্প্রদায়িক রচনা আছে।
পূর্ব পাকিস্তানের সেই রেজিস্টেন্সের বিরুদ্ধে চানক্যবাদীদের (ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা) ইশারায় ১৯৬১ সৃষ্টি হয়েছিলো ‘ছায়ানট’। তাদের মূল উদ্দেশ্য সংস্কৃতির নাম দিয়ে এ অঞ্চলের মানুষের ভেতর ভারতীয় সংস্কৃতি প্রবেশ করানো। ছায়ানটের প্রথম সভাপতি ছিলেন বেগম সুফিয়া কামাল (সুলতানা কামালের মা)।
উল্লেখ্য, পূর্ব পাকিস্তানে ভারতীয় সংস্কৃতি প্রবেশ করাতে, চানক্যবাদীরা ছিলো বদ্ধপরিকর। তারা এ অঞ্চলের মানুষের রক্তে-গোশ্তে সংস্কৃতির ছদ্মাবরণে প্রবেশ করিয়ে দেয় ভারতীয় জাতীয়তাবাদ। প্রথম সভাপতি বেগম সুফিয়া কামাল উগ্রভারতীয় জাতীয়তাবাদী কবি রবীন্দ্রনাথের গান সম্পর্কে এজন্যই বলেছিলো: “রবীন্দ্রসঙ্গীত আমার কাছে ইবাদতের মতো”।
রমনার বটমূলে আজকের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের সৃষ্টিকর্তাদের মধ্যে মূল ছিলো দুইজন ছায়ানট কর্মী: ১-ওয়াহিদুল হক, ২-সানজীদা খাতুন (রবীন্দ্র গায়িকা মিতা হকের চাচা-চাচী)। ১৯৬৭ সালে এই দুই কর্মী পূর্ব পাকিস্তানে সাংস্কৃতিক আগ্রাসন সৃষ্টির জন্য চানক্যবাদীদের ইশরায় সফলভাবে সূচনা করে কথিত ‘বর্ষবরণ’ অনুষ্ঠান।
এ সম্পর্কে ডঃ নওয়াজেশ আহমদ বলেন,
‘১৯৬৭ সনে বাঙালি সংস্কৃতির আকাশে মেঘের ঘনঘটা । .... ..... ছায়ানটের সভা বসেছে । সভায় ঠিক হল প্রতিবাদ হিসেবে নববর্ষের অনুষ্ঠান হবে উম্মুক্ত ময়দানে- সর্বসাধারণের সমাগমে। সানজিদা প্রস্তাব করলেন কোন বড় গাছের নিছে অনুষ্ঠান আয়োজনের । ওয়াহিদুল হক এতে সায় দিয়ে আমার দিকে তাকাল, ‘চেনা কোন জায়গা আছে?’ হঠাৎ মনেপড়ে গেলো রমনা পার্কের মহীরুহ অশ্বত্থের কথা’।, বৃক্ষটি দেখার পর সবার পছন্দ হলে রমনার এই বোধি বৃক্ষের কোমল ছায়া হতে জন্ম নেয় ইতিহাসের আরেকটি সুবর্ন অধ্যায়ের। পহেলা বৈশাখ।” (ডঃ নওয়াজেশ আহমদের ‘মহা অশ্বত্থের গান’ নামক একটি লেখা থেকে নেওয়া)
এ সম্পর্কে ওয়াহিদুল হক বলেন:
‘ মধ্য এশিয়া, দক্ষিন এশিয়া, দক্ষিন পূর্ব এশিয়া অর্থাৎ প্রাচ্যের প্রায় সবটা জুড়ে বৈশাখী নামের একটি বিরাট উৎসব আছে। ওই বৈশাখী নামের ভিতর লুকিয়ে আছে সমস্ত প্রাচ্য জুড়ে ভারত সংস্কৃতির প্রভাবের সত্যটি, যে সংস্কৃতির মূল অংশে আমরা বাঙালিরা আছি জড়িয়ে। প্রায় সবটাই মধ্য এশিয়া এক সময়ে বৌদ্ধ ছিল। সেই নিরীশ্বরবাদী ধর্মের সবচেয়ে বড় উৎসব বুদ্ধ পূর্ণিমা অর্থাৎ যে তিথিতে বুদ্ধের জন্ম, বোধি প্রাপ্তি ও পরিনির্বান। এই তিথিটি আসলে বৈশাখী পূর্ণিমা, বৈশাখে উদিত চন্দ্রের পূর্ণচন্দ্র তথা বৈশাখী।’ (প্রবন্ধ: বৈশাখ)
এ সম্পর্কে সানজীদা খাতুন এক সাক্ষাৎকারে বলেন:
“পহেলা বৈশাখ, এই যে উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে পহেলা বৈশাখ—এ হচ্ছে ছায়ানটের সবচেয়ে বড় কাজ, আমরা বলতে পারি। কারণ এই উন্মুক্ত প্রাঙ্গণের পহেলা বৈশাখে রমনার বটমূল যেটাকে আমরা বলি, সেখানে আমরা যেটা করতে চেয়েছিলাম যে মানুষ আসুক।” (http://vubangram.blogspot.com/2010/10/blog-post_8502.html)
সানজীদা খাতুন চেয়েছেন, লোক আসুক। হ্যা এতদিনে লোক এসেছে, চানক্যবাদীদের টার্গেটও সফল হয়েছে। বাংলাদেশে মুসলিম সমাজ বেয়াকুফের মত গলায় মালা দিয়ে বন্ধুরূপে মেনে নিয়েছে তাদের শত্রুদের, উৎসবরূপে গ্রহণ করেছে সংস্কৃতিক আগ্রাসণকে। আর সংস্কৃতি এমন এক জিনিস, যার থেকে গ্রহণ করা হয়, তার কাছে স্বাধীনতার ১৫ আনাই বিলিয়ে দিতে হয়।
তবে শেষ কথা হল তারা সফল...............!
আমার বন্ধুদের বলতে চাই, এরপরেও কি তোমরা সচেতন হবে না !!
আজ থাকবে কারা সৃষ্টি করলো আজকের পহেলা বৈশাখ ??
অনেকেই ভেবে থাকেন, পহেলা বৈশাখ মনে হয় অনেক আগে থেকেই জাতীয় উৎসব, এটা ভুল। আগে পহেলা বৈশাখের কোন অস্তিত্বই ছিলো না, গ্রামগঞ্জে যা ছিলো তা হচ্ছে চৈত্রসংক্রান্তী পূজার মেলা। পহেলা বৈশাখকে জাতীয় উৎসব করার প্রথম স্বপ্ন দেখে সংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানটের কয়েকজন সদস্য।
এখানে সংস্কৃতিক সংগঠন ‘ছায়ানট’ সম্পর্কে কিছু বলার দরকার। পাকিস্তান আমলে পাকিস্তান সরকার পূর্ব পাকিস্তানে রবীন্দ্র চর্চার ঘোর বিরোধী ছিলো। এর কারণ হিসেবে দুটি যুক্তি ছিলো তাদের:
১) রবীন্দ্রনাথ ভারতীয় উগ্র জাতীয়তাবাদী কবি,
২) রবীন্দ্রনাথের অনেক মুসলিম বিরোধী সাম্প্রদায়িক রচনা আছে।
পূর্ব পাকিস্তানের সেই রেজিস্টেন্সের বিরুদ্ধে চানক্যবাদীদের (ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা) ইশারায় ১৯৬১ সৃষ্টি হয়েছিলো ‘ছায়ানট’। তাদের মূল উদ্দেশ্য সংস্কৃতির নাম দিয়ে এ অঞ্চলের মানুষের ভেতর ভারতীয় সংস্কৃতি প্রবেশ করানো। ছায়ানটের প্রথম সভাপতি ছিলেন বেগম সুফিয়া কামাল (সুলতানা কামালের মা)।
উল্লেখ্য, পূর্ব পাকিস্তানে ভারতীয় সংস্কৃতি প্রবেশ করাতে, চানক্যবাদীরা ছিলো বদ্ধপরিকর। তারা এ অঞ্চলের মানুষের রক্তে-গোশ্তে সংস্কৃতির ছদ্মাবরণে প্রবেশ করিয়ে দেয় ভারতীয় জাতীয়তাবাদ। প্রথম সভাপতি বেগম সুফিয়া কামাল উগ্রভারতীয় জাতীয়তাবাদী কবি রবীন্দ্রনাথের গান সম্পর্কে এজন্যই বলেছিলো: “রবীন্দ্রসঙ্গীত আমার কাছে ইবাদতের মতো”।
রমনার বটমূলে আজকের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের সৃষ্টিকর্তাদের মধ্যে মূল ছিলো দুইজন ছায়ানট কর্মী: ১-ওয়াহিদুল হক, ২-সানজীদা খাতুন (রবীন্দ্র গায়িকা মিতা হকের চাচা-চাচী)। ১৯৬৭ সালে এই দুই কর্মী পূর্ব পাকিস্তানে সাংস্কৃতিক আগ্রাসন সৃষ্টির জন্য চানক্যবাদীদের ইশরায় সফলভাবে সূচনা করে কথিত ‘বর্ষবরণ’ অনুষ্ঠান।
এ সম্পর্কে ডঃ নওয়াজেশ আহমদ বলেন,
‘১৯৬৭ সনে বাঙালি সংস্কৃতির আকাশে মেঘের ঘনঘটা । .... ..... ছায়ানটের সভা বসেছে । সভায় ঠিক হল প্রতিবাদ হিসেবে নববর্ষের অনুষ্ঠান হবে উম্মুক্ত ময়দানে- সর্বসাধারণের সমাগমে। সানজিদা প্রস্তাব করলেন কোন বড় গাছের নিছে অনুষ্ঠান আয়োজনের । ওয়াহিদুল হক এতে সায় দিয়ে আমার দিকে তাকাল, ‘চেনা কোন জায়গা আছে?’ হঠাৎ মনেপড়ে গেলো রমনা পার্কের মহীরুহ অশ্বত্থের কথা’।, বৃক্ষটি দেখার পর সবার পছন্দ হলে রমনার এই বোধি বৃক্ষের কোমল ছায়া হতে জন্ম নেয় ইতিহাসের আরেকটি সুবর্ন অধ্যায়ের। পহেলা বৈশাখ।” (ডঃ নওয়াজেশ আহমদের ‘মহা অশ্বত্থের গান’ নামক একটি লেখা থেকে নেওয়া)
এ সম্পর্কে ওয়াহিদুল হক বলেন:
‘ মধ্য এশিয়া, দক্ষিন এশিয়া, দক্ষিন পূর্ব এশিয়া অর্থাৎ প্রাচ্যের প্রায় সবটা জুড়ে বৈশাখী নামের একটি বিরাট উৎসব আছে। ওই বৈশাখী নামের ভিতর লুকিয়ে আছে সমস্ত প্রাচ্য জুড়ে ভারত সংস্কৃতির প্রভাবের সত্যটি, যে সংস্কৃতির মূল অংশে আমরা বাঙালিরা আছি জড়িয়ে। প্রায় সবটাই মধ্য এশিয়া এক সময়ে বৌদ্ধ ছিল। সেই নিরীশ্বরবাদী ধর্মের সবচেয়ে বড় উৎসব বুদ্ধ পূর্ণিমা অর্থাৎ যে তিথিতে বুদ্ধের জন্ম, বোধি প্রাপ্তি ও পরিনির্বান। এই তিথিটি আসলে বৈশাখী পূর্ণিমা, বৈশাখে উদিত চন্দ্রের পূর্ণচন্দ্র তথা বৈশাখী।’ (প্রবন্ধ: বৈশাখ)
এ সম্পর্কে সানজীদা খাতুন এক সাক্ষাৎকারে বলেন:
“পহেলা বৈশাখ, এই যে উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে পহেলা বৈশাখ—এ হচ্ছে ছায়ানটের সবচেয়ে বড় কাজ, আমরা বলতে পারি। কারণ এই উন্মুক্ত প্রাঙ্গণের পহেলা বৈশাখে রমনার বটমূল যেটাকে আমরা বলি, সেখানে আমরা যেটা করতে চেয়েছিলাম যে মানুষ আসুক।” (http://vubangram.blogspot.com/2010/10/blog-post_8502.html)
সানজীদা খাতুন চেয়েছেন, লোক আসুক। হ্যা এতদিনে লোক এসেছে, চানক্যবাদীদের টার্গেটও সফল হয়েছে। বাংলাদেশে মুসলিম সমাজ বেয়াকুফের মত গলায় মালা দিয়ে বন্ধুরূপে মেনে নিয়েছে তাদের শত্রুদের, উৎসবরূপে গ্রহণ করেছে সংস্কৃতিক আগ্রাসণকে। আর সংস্কৃতি এমন এক জিনিস, যার থেকে গ্রহণ করা হয়, তার কাছে স্বাধীনতার ১৫ আনাই বিলিয়ে দিতে হয়।
তবে শেষ কথা হল তারা সফল...............!
আমার বন্ধুদের বলতে চাই, এরপরেও কি তোমরা সচেতন হবে না !!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন