সোমবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৫

বেদাতি লোকের বেদাত......

আজকাল কিছু লোক সকল বিদয়াতকেই

(নতুন উদ্ভাবিত পদ্ধতি) গোমরাহী বলে

থাকে এবং দলীল হিসাবে তারা

নিম্নোক্ত হাদীস শরীফখানা পেশ

করে থাকে -

 “প্রত্যেক বিদয়াতই

গোমরাহী, আর প্রত্যেক গোমরাহ লোকই
জাহান্নামে যাবে।”
কিন্তু তারা এ হাদীস বলেনা - “যে
কেউ দ্বীন ইসলামে উত্তম কোন পদ্ধতি
উদ্ভাবন করবে (যা শরীয়ত সম্মত), তার
জন্য সে সাওয়াব পাবে এবং তারপরে
যারা এ পদ্ধতির অনুসরণ করবে, তার
সাওয়াবও সে পাবে |” (মুসলিম শরীফ)
যদি নতুন উদ্ভাবিত সব কিছুই বিদয়াত হত
তাহলে এ হাদীসের কি ব্যাখ্যা ?
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম এর পর নতুন উদ্ভব হয় এবং তা
দ্বীনের সাহায্য করে থাকে অথবা
সাহায্যকারী না হলেও দ্বীনের কোন
ক্ষতি করে না, সেটাই বিদয়াত
লিদদ্বীন বা লোগবী বিদয়াত অর্থাৎ
বিদয়াতে হাসানা বলে। আর যে নতুন
বিষয় উদ্ভব হওয়ার কারণে দ্বীনের
কিছুমাত্রও ক্ষতি হয়, তবে সেটাই হবে
বিদয়াতে ফিদদ্বীন বা শরয়ী বিদয়াত
অর্থাৎ বিদয়াতে সাইয়্যিয়াহ্ । তাই
বিদয়াত বলতেই পরিত্যাজ্য নয় ।
কেউ কেউ আবার বলে থাকে, খাইরুল
কুরুনের পর আবিস্কৃত প্রত্যেক নতুন
জিনিসই বিদয়াতে সাইয়্যিয়াহ্ । অথচ
এটা মোটেও শুদ্ধ নয় । কেননা যদি তাই
হতো, তবে আমাদের সামাজে প্রচলিত
এমন অনেক নতুন বিষয় রয়েছে, যা অবশ্যই
পরিত্যাগ করা জরুরী হয়ে পড়তো।
যেমন-
(ক) বর্তমানে যে পদ্ধতিতে মাদ্রাসায়
ইলম শিক্ষা দেওয়া হয়, সেই পদ্ধতি
“খাইরুল কুরুন” পর্যন্ত কারো সময়ই ছিলনা ।
(খ) বর্তমানে আমরা যে নাহু সরফ শিক্ষা
করে থাকি, তাও “খাইরুল কুরুনে” ছিল
না ।
(গ) বর্তমানে আমরা যে পদ্ধতিতে
তারাবীহর নামাজ পড়ে থাকি, এ
পদ্ধতিও হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম এর সময় ছিলনা।
(ঘ) বর্তমানে আমরা মসজিদে
জামায়াতের জন্য যে সময় নির্ধারণ
করে থাকি, তাও হযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সময় ছিলনা।
(ঙ) বর্তমানে আমরা যে পদ্ধতিতে
জুময়ার সানী আজান দিয়ে থাকি, এ
পদ্ধতি হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম এর সময় ছিলনা ।
(চ) বর্তমানে আমরা যে পদ্ধতিতে
ওয়াজ মাহফিল করে থাকি ঐরূপ পদ্ধতি
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম ওয়াজ মাহফিল করেননি ।
(ছ) বর্তমানে আমরা যে পোলাও,
বিরিয়ারী কোর্মা, বুট, মুড়ী,
পিয়াজো খেয়ে থাকি, তা হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
খাননি।
(জ) বর্তমানে আমরা যে সকল যান-
বাহনে চড়ে থাকি যেমন- মোটরগাড়ী,
ট্রেন, প্লেন, রকেট, রিক্সা জাহাজ
ইত্যাদি এবং পবিত্র হজ্বব্রত পালন করি
ও বিদেশ ভ্রমনে যাই, তা হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনার সময় ছিলনা, তিনি ঐগুলোতে
কখনো চড়েননি।
(ঝ) বর্তমানে মানুষ যে সকল খাট-পালঙ্ক,
সোকেস-আলমারী ইত্যাদি ব্যবহার
করে থাকে, তা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম ব্যবহার
করেননি ।
(ঞ) বর্তমানে বিয়ে-শাদীতে যে
কাবিননামা করা হয়, তা হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর
সময় ছিলনা ।
(ত) বর্তমানে যে সকল আধুনিক
যন্ত্রপাতি মানুষ ব্যবহার করছে, যেমন-
ফ্যান, ঘড়ি, চশমা, মাইক, কম্টিউটার
ইত্যাদি, এগুলো হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সময় ছিলনা।
(থ) বর্তমানে যে পদ্ধতিতে মাদ্রাসার
জন্য চাঁদা আদায় করা হয়, যেমন সদকা,
ফেৎরা, যাকাত, কুরবানীর চামড়া,
মান্নতের টাকা ইত্যাদি এবং যে
পদ্ধতিতে মাদ্রাসা তৈরী করা হয়,
তা যেমন সা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সময়
ছিলনা । তদ্রুপ ‘খায়রুল কুরুনেও’ ছিলনা।
(দ) মসজিদ টাইলস করা , এসি , ফ্যান ,
মাইক লাগানো হুযুর খায়রুল কুরুনে
ছিলনা ।
এমনিভাবে আরো অনেক বিষয়ই
রয়েছে, যা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম বা “খায়রুল
কুরুনে” ছিলনা কিন্তু আমরা তা সবসময়
করছি ।
আপনারা কি এগুলো ব্যবহার হতে বিরত
থাকেন বা হেফাজতে আছেন?
তাহলে নিজেই বিদয়াতে ঢুবে
থেকে কি করে নেক ও সর্বোত্তম আমল
ঈদে মিলাদুন্নবীকে বিদয়াত বলছেন ?
কালেক্টেড - সকল ঈদের সেরা ঈদ -
সাইয়্যিদুল আইয়াদ শরীফ

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন