বুধবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৫

২০০ বছর গোনাহ করেও যে ব্যক্তি নাজাত পেলো.......

বিখ্যাত ইমাম , জামানার মুজাদ্দিদ,
হাফিজে হাদীস , সকল মাদ্রাসায়
পঠিত তাফসির
জালালাইন শরীফের
লেখক ইমাম জালালুদ্দীন সূয়ুতি
রহমতুল্লাহি আলাইহি তার বিখ্যাত
কিতাব খায়িছুল কুবরা ১ম খ- ২৯ পৃষ্ঠায়
উল্লেখ করেছেন,
“বনী ইসরাইলের এক ব্যক্তি যে দু’শ বছর
হায়াত পেয়েছিলো। ওই ব্যক্তি তার
এই দীর্ঘ হায়াতে কোন নেক কাজই
করেনি। আল্লাহ পাকের
নাফরমানীতে পুরো জিন্দেগী
কাটিয়েছে। যখন তার ইন্তিকাল হলো,
তখন তার প্রতিবেশী ও এলাকার
লোকেরা ওই ব্যক্তিকে একটি
আবর্জনাময় স্তূপে নিক্ষেপ করলো। তার
গোসল কাফন-দাফনের ব্যবস্থা
এলাকাবাসী না করে তাকে ফেলে
রাখলো।
এদিকে মহান আল্লাহ পাক তিনি ওই
যামানার জলীলুল ক্বদর রসূল হযরত মূসা
কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম এর
নিকট ওহী করলেন, ‘হে আমার নবী ও রসূল
হযরত মূসা আলাইহিস সালাম! অমুক
এলাকায় অমুক গ্রামে একজন লোক
ইন্তিকাল করেছে, এলাকাবাসী
তাকে ফেলে দিয়েছে। তার গোসল,
কাফন-দাফনের ব্যবস্থা কেউ করছে না।
আপনি সেখানে যান, গিয়ে ওই
ব্যক্তির গোসল-কাফন দাফনের ব্যবস্থা
করুন!’ হযরত মূসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস
সালাম তিনি সে এলাকায় গেলেন।
এলাকাবাসীদেরকে বললেন, এখানে
কি একজন লোক ইন্তিকাল করেছে?
এলাকাবাসী বললো, হ্যাঁ, একজন লোক
ইন্তিকাল করেছে, যে লোকটা দু’শ বছর
হায়াত পেয়েছিলো। কিন্তু সে কোন
নেক কাজ করেনি। মহান আল্লাহ
পাকের নাফরমানীতে ইন্তিকাল
অবধি দৃঢ় ছিলো। আমরা তাকে পছন্দ
করিনা! কারণ, সে একটা বড় বদকার, বড়
নাফরমানবান্দা।
হযরত মূসা আলাইহিস সালাম একথা শুনে
আল্লাহ পাকের নিকট আরজ করলেন, “হে
আল্লাহ তায়ালা ! এই লোকটা আপনার
নাফরমান বান্দা, বড় গুনাহগার।
এলাকার লোকেরা তাকে পছন্দ
করেনা। কারণ, সে দু’শ বছর হায়াত
পেয়েছিলো কিন্তু সে কোন নেক
কাজ করেনি। পুরো জিন্দেগী
নাফরমানীতে কাটিয়ে দিয়েছে।
তখন মহান আল্লাহ পাক বললেন, হ্যাঁ।
তারপরও তাকে একটা আমলের কারণে
তার জীবনের সমস্ত গুনাহ মাফ করে,
জাহান্নাম হারাম করে, আমি
জান্নাত ওয়াজিব করে দিয়েছি এবং
আপনার মতো একজন জলীলুল ক্বদর রসূল
আলাইহিস সালামকে পাঠিয়েছি
তার গোছল, কাফন-দাফন করার জন্য।
তখন হযরত মুসা আলাইহিস সালাম
বললেন, হে আল্লাহ পাক! আমাকে
জানিয়ে দিন যে, এই লোকটা এমন কী
আমল করেছে যার কারণে তার দু’শত
বছরের গুনাহখতা মাফ করে একজন
জলীলুল ক্বদর রসূলকে পাঠিয়েছেন তার
গোসল, কাফন-দাফনের জন্য!
হে আল্লাহ তায়ালা! আপনি আমাকে
সেই আমলটি জানিয়ে দিন। সেই আমল
আমি নিজে করবো এবং আমার উম্মতকে
শিক্ষা দিবো। মহান আল্লাহ পাক
বললেন, হে আমার রসূল হযরত মূসা
আলাইহিস সালাম! আপনাকে আমি
সেই আমলটির কথা জানাচ্ছি। তা
হচ্ছে, আপনার প্রতি নাযিলকৃত কিতাব
‘তাওরাত শরীফ’ লোকটা একদিন
খুলেছিলো। খুলেই সে দেখতে পেলো,
রাসূল পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লামের নাম মুবারক। দেখার সাথে
সাথে সেই বান্দাটা ওই নাম মুবারক
চুম্বন করলো, চোখে লাগালো এবং
সাথে সাথে আমার হাবীব হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর
প্রতি ছলাত সালাম তথা দরূদ শরীফ পাঠ
করলো। আমি তার এই আমলকে পছন্দ করে
নিলাম। কাজেই আমি তার এই ইবাদত
কবূল করে তার দু’শ বছরের গুনাহখতা ক্ষমা
করে আপনার মত একজন জলীলুল ক্বদর রসূল
পাঠিয়েছি তার গোসল, কাফন-
দাফনের জন্য। সুবহানাল্লাহ! আর আমি
সত্তরজন জান্নাতী হুরের সাথে তার
বিবাহ সম্পাদন করব।”
[ এ ঘটনাটি আরো পাওয়া যায় :
√ হিলয়াতুল আউলিয়া ৩ য়.খন্ড ১৪২ পৃষ্ঠা।
√ নুযহাতুল মাজালিস ২য় খন্ড ১৪২ পৃষ্ঠা ।
√ সিরাতে হলবিয়া ১ম খন্ড ৮৩ পৃষ্ঠা । ]
নবীজির নাম মুবারক পেয়ে বনী
ঈসরাইলী যুগে একজন চুম্বন করলে যদি
২০০ বছর গুনাহ মাফ হয়, তবে আমরা
নবীজিকে পাওয়ার জন্য ঈদে মীলাদুন
নবী উপলক্ষে খুশি করলে কি ফজিলত
হবে তা সত্যিই চিন্তা ও ফিকিরের
বিষয়।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন