রবিবার, ৩ জুলাই, ২০১৬

গুলশানে জিম্মি ঘটনায় প্রশাসনের  ‘অপারেশন থান্ডারবোল্ট’ এর বিবরন সময় সকাল ৭:৪০, ০২/০৭/২০১৬... বিস্তারিত....


রাজধানীর গুলশানে স্প্যানিশ রেস্তোরাঁ হলি আর্টিজান থেকে ২০ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের সবাইকে গতকাল শুক্রবার রাতেই ধারালো অস্ত্র দিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। আজ শনিবার সকালে কমান্ডো অভিযানের পর দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান মিলিটারি অপারেশন্সের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাঈম আশফাক চৌধুরী।


গতকাল শুক্রবার রাতে বন্দুকধারীরা হামলা চালানোর পর রাতভর ক্যাফেটি পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি ঘিরে রাখার পর সকালে সামরিক বাহিনী যুক্ত হয়ে শুরু করে কমান্ডো অভিযান। ‘অপারেশন থান্ডারবোল্ট’ নামের এই অভিযান সকালে ৭টা ৪০ মিনিটে শুরু হয়ে সকাল সাড়ে ৮টায় শেষ হয় বলে জানান ব্রিগেডিয়ার নাঈম। শনিবার সকাল ৭টা ৪০ মিনিটে গুলশান-২-এর ৭৯ নম্বর সড়কের ওই রেস্তোরাঁয় সেনাবাহিনী, পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি ও সোয়াতের সমন্বয়ে কমান্ডো অভিযান চালানো হয়।


একনজরে জিম্মি সংকট এবং ‘অপারেশন থান্ডারবোল্ট’ঘটনাক্রম তুলে ধরা হল-


সকাল ৭টা ৩০ মিনিটঃ রাতভর গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁ সংলগ্ন এলাকা ঘিরে রাখার পর যৌথ সেনা, নৌ,পুলিশ, র‍্যাব এবং বিজিবির সমন্বয়ে যৌথ কমান্ডো দল গুলশানে অভিযানের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেয়।


৭টা ৪০ মিনিটঃ কমান্ডো বাহিনী অভিযান শুরু করে।অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত দলের সদস্যরা রেস্তোরাঁর ভেতরে প্রবেশ করে। এ সময় ব্যাপক গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়। এসময় পাশের প্রায় খালি একটি ভবন থেকে টেলিস্কোপ লাগানো স্নাইপার রাইফেল দিয়ে গুলি ছুড়তে দেখতে পান। গুলি ছোড়া হয় সাঁজোয়া যান থেকেও।


পরে সেনা সাঁজোয়া যান হলি বেকারির দেয়াল ভেঙে ভেতরে ঢোকে। ওই কম্পাউন্ডের বাইরের দিকে থাকা পিজা কর্নার এ সময় গুঁড়িয়ে যায়। যে সড়কে ওই বেকারি, সেই ৭৯ নম্বর সড়কের মোড় থেকে ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের ফায়ার এক্সটিংগুইশার নিয়ে তিনি ওই ভবনের দিকে যেতে দেখা গেছে।


৮টা ১৫ মিনিটঃ রেস্তোরাঁ থেকে প্রথম দফায় নারী ও শিশুসহ ৬ জনকে উদ্ধার করা হয়। একজনকে অ্যাম্বুলেন্সে নিয়ে যাওয়া হয়।


৮টা ৫৫ মিনিটঃ ভবনের নিয়ন্ত্রণ নেয় অভিযানকারীরা।গোয়েন্দা দল ভবনের ভেতর বিস্ফোরকের জন্য তল্লাশি শুরু করে। কিছুক্ষণ পরই আলামত সংগ্রহের কাজ শুরু করে গোয়েন্দারা।


৯টা ১৫ মিনিটঃ অভিযান শেষ। কমান্ডো অভিযানের মধ্যদিয়ে ঢাকার গুলশানের একটি রেস্তোরাঁয় প্রায় ১২ ঘণ্টার রক্তাক্ত জিম্মি সংকটের অবসান হয়।


৯টা ২০ মিনিটঃ বিস্ফোরণের প্রচণ্ড শব্দে কেঁপে ওঠে গুলশান। পরে জানানো হয়, বোমা নিস্ক্রিয় ইউনিটের সদস্যরা রেস্তোরাঁর ভেতরে পাওয়া অবিস্ফোরিত বোমার বিস্ফোরণ ঘটাচ্ছে।


৯টা ৩০ মিনিটঃ গুলশান এলাকা ছেড়ে বেরিয়ে যান পুলিশ মহাপরিদর্শক।


১০টাঃ ৪ জন বিদেশীসহ ১৩ জন জীবিত উদ্ধারের খবর জানানো হয়। রেস্টুরেন্টের ভেতরে অজ্ঞাত পাঁচজনের মৃতদেহ পাবার কথা পুলিশ জানায়।


১১টা ৫০ মিনিটঃ অভিযানে সন্ত্রাসীদের ৬ জন নিহত এবং একজন ধরা পড়েছে বলে নিশ্চিত করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।


দুপুর ১টা ৩০ মিনিটঃ আইএসপিআরের ব্রিফিং থেকে জানানো হয়- বন্দুকধারীরা শুক্রবার রাতেই জিম্মি করে ২০ জনকে নৃশংসভাবে হত্যা করে। শনিবার অভিযানের সময় ৬ বন্দুকধারীকে হত্যা ও একজনকে জীবিত আটক করা হয়।‘অপারেশন থান্ডারবোল্ট’ নামের এই অভিযান সকালে ৭টা ৪০ মিনিটে শুরু হয়ে সকাল সাড়ে ৮টায় শেষ হয় বলে জানান ব্রিগেডিয়ার নাঈম। তিনি জানান, প্যারা কমান্ডোরা ৭টা ৪০ মিনিটে অপারেশন শুরু হয়, ১২ থেকে ১৩ মিনিটের মধ্যে সকল অপরাধীকে নির্মূল করে সকাল সাড়ে ৮টায় অভিযানের সফল সমাপ্তি ঘটে।



এ ছাড়া ১৩ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। এদের মধ্যে তিনজন শ্রীলংকান ও একজন জাপানী নাগরিক রয়েছন




কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন