শনিবার, ২ জানুয়ারী, ২০১৬

ফরজ নামাযের পর সম্মিলিত মুনাজাত কি বিদআত??

ফরজ নামাযের পর
সম্মিলিত মুনাজাত কি বিদআত?
____________________
প্রশ্ন :
১)ফজরের নামাজের পর সুরা
হাশরের যে আয়াত গুলো পাঠ করা
হয় তার একটি প্রচলিত পদ্ধতি হলো
ইমাম পিছন ফিরে বসে দোয়া
দরুদের পর উচ্চস্বরে আয়াত গুলো একটু
একটু করে পাঠ করে আর মুসল্লীরা
শুনে শুনে পরমুহুর্তে পাঠ করেl
এটা কি শরীয়ত সম্মত পদ্ধতি ?
২)
(ক) জামাতের সাথে ফরজ
নামাজের পর যে সম্মিলিতভাবে
মুনাজাত করা হয় তা কি শরীয়ত
সম্মত?
(খ) রাসুল ছল্লাল্লাহু আলাইহি বা
সাহাবাগণ কি এমনটা করতেন?
[বি:দ্র: আমি কোন ইমামকে কখনোই
মুনাজাত ছাড়তে দেখিনিl
এটা সম্ভবত অনেকেই আবশ্যক মনে
করে]
উত্তর
ﻭﻋﻠﻴﻜﻢ ﺍﻟﺴﻼﻡ ﻭﺭﺣﻨﺔ ﺍﻟﻠﻪ ﻭﺑﺮﻛﺎﺗﻪ
ﺑﺴﻢ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻟﺮﺣﻤﻦ ﺍﻟﺮﺣﻴﻢ
১ম প্রশ্নের জবাব
এতে খারাপের কিছুই নেই। এটি
ইমাম সাহেবগণ করে থাকেন
মুসল্লিদের শিক্ষাদানের জন্য।
কারণ অনেক মুসল্লিই সূরা হাশরের
শেষ তিন আয়াত পড়তে জানে না।
তাই ইমাম সাহেব এভাবে বলে
বলে পড়িয়ে দেন। সুতরাং এটি
নাজায়েজ হবার কোন শরয়ী কারণই
বিদ্যমান নেই।
২য় প্রশ্নের জবাব
ফরজ নামাযের পর মুনাজাতের বিষয়
বুঝতে হলে তিনটি পয়েন্ট ভাল
করে বুঝতে হবে। যথা-

ফরজ নামাযের পর মুনাজাত
প্রমাণিত কি না?

সম্মিলিত মুনাজাত প্রমাণিত কি
না?

ফরজ নামাযের পর সম্মিলিত
মুনাজাতের হুকুম কী?
১ম বিষয়
ফরজ নামাযের পর মুনাজাত করা
একাধিক সহীহ হাদীস দ্বারা
প্রমাণিত। যেমন-
ক)
ﻭَﻗَﺎﻝَ : ﻳَﺎ ﻣُﺤَﻤَّﺪُ، ﺇِﺫَﺍ ﺻَﻠَّﻴْﺖَ ﻓَﻘُﻞْ : ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺇِﻧِّﻲ
ﺃَﺳْﺄَﻟُﻚَ ﻓِﻌْﻞَ ﺍﻟﺨَﻴْﺮَﺍﺕِ، ﻭَﺗَﺮْﻙَ ﺍﻟْﻤُﻨْﻜَﺮَﺍﺕِ، ﻭَﺣُﺐَّ
ﺍﻟْﻤَﺴَﺎﻛِﻴﻦِ ،
হযরত ইবনে আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু
তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত।
আল্লাহ তাআলা বলেছেন, হে
মুহাম্মদ! যখন তুমি নামায পড়ে
ফেলবে, তখন এ দুআ করবে- হে
আল্লাহ!আপনার নিকট ভাল কাজের
তৌফিক চাই এবং মন্দ কাজ থেকে
বিরত থাকার ব্যাপারে সাহায্য
চাচ্ছি এবং আপনার দরবারের
মিসকীন তথা আল্লাহ ওয়ালাদের
মুহাব্বত কামনা করছি। {সুনানে
তিরমিজী, হাদীস নং-৩২৩৩}
খ)
ইমাম বুখারী রহমতুল্লাহি আলাইহি
স্বীয় কিতাব আততারীখুল
কাবীরে এনেছেন-
ﻋَﻦْ ﻛﺎﺗﺐ ﺍﻟﻤﻐﻴﺮﺓ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻪُ : ﻛَﺎﻥَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ
ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻳَﺪْﻋُﻮ ﻓﻲ ﺩﺑﺮ ﺻﻼﺗﻪ
হযরত মুগিরা রাদ্বিয়াল্লাহু
তায়ালা আন থেকে বর্ণিত। রাসূল
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
নামায শেষে দুআ করতেন।
{আততারীখুল কাবীর, হাদীস
নং-১৭৭২, ৬/৮০}
গ)
ﻋَﻦْ ﺃَﻧَﺲِ ﺑْﻦِ ﻣَﺎﻟِﻚٍ، ﻗَﺎﻝَ : ﻛَﺎﻥَ ﻣَﻘَﺎﻣِﻲ ﺑَﻴْﻦَ ﻛَﺘِﻔَﻲْ
ﺭَﺳُﻮﻝِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﻓَﻜَﺎﻥَ ﺇِﺫَﺍ ﺳَﻠَّﻢَ
ﻗَﺎﻝَ : « ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺍﺟْﻌَﻞْ ﺧَﻴْﺮَ ﻋُﻤُﺮِﻱ ﺁﺧِﺮَﻩُ، ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺍﺟْﻌَﻞْ
ﺧَﻮَﺍﺗِﻴﻢَ ﻋَﻤَﻠِﻲ ﺭِﺿْﻮَﺍﻧَﻚَ، ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺍﺟْﻌَﻞْ ﺧَﻴْﺮَ ﺃَﻳَّﺎﻣِﻰ
ﻳَﻮْﻡَ ﺃَﻟْﻘَﺎﻙَ »
হযরত আনাস বিন মালিক
রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আন
থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি
ছিলাম রাসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম এর কাঁধের পাশে।
তখন রাসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম সালাম ফিরিয়ে
বললেন, হে আল্লাহ! তুমি আমার
শেষ জীবনকে সবচে’ সুন্দর কর। হে
আল্লাহ! তুমি আমার শেষ আমলকে
তোমার সন্তুষ্টি অনুপাতে কর। হে
আল্লাহ! তুমি তোমার সাথে আমার
সাক্ষাতের দিনকে সর্বোত্তম দিন
কর। {আলমুজামুল আওসাত
লিততাবারানী, হাদীস নং-৯৪১১}
ঘ)
হযরত সাদ রাদ্বিয়াল্লাহু
তায়ালা আন বলেন,
ﻭَﻳَﻘُﻮﻝُ : ﺇِﻥَّ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻛَﺎﻥَ
ﻳَﺘَﻌَﻮَّﺫُ ﺑِﻬِﻦَّ ﻓِﻲ ﺩُﺑُﺮِ ﻛُﻞِّ ﺻَﻠَﺎﺓٍ « ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺇِﻧِّﻲ ﺃَﻋُﻮﺫُ ﺑِﻚَ
ﻣِﻦَ ﺍﻟْﺒُﺨْﻞِ، ﻭَﺃَﻋُﻮﺫُ ﺑِﻚَ ﻣِﻦَ ﺍﻟْﺠُﺒْﻦِ، ﻭَﺃَﻋُﻮﺫُ ﺑِﻚَ ﻣِﻦْ
ﺃَﻥْ ﺃُﺭَﺩَّ ﺇِﻟَﻰ ﺃَﺭْﺫَﻝِ ﺍﻟْﻌُﻤُﺮِ، ﻭَﺃَﻋُﻮﺫُ ﺑِﻚَ ﻣِﻦْ ﻓِﺘْﻨَﺔِ ﺍﻟﺪُّﻧْﻴَﺎ،
ﻭَﻋَﺬَﺍﺏِ ﺍﻟْﻘَﺒْﺮِ »
রাসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম প্রতি নামাযের পর এই
শব্দে আল্লাহর কাছে পানাহ
চাইতেন, “হে আল্লাহ! আমি
তোমার কাছে কৃপণতা থেকে
পানাহ চাই। এবং অভাব থেকে
পানাহ চাই এবং অশীতিপর
বৃদ্ধাবস্থা থেকে পানাহ চাই এবং
দুনিয়ার ফিতনা ও কবরের আজাব
থেকে পানাহ চাই। {সুনানে
নাসায়ী, হাদীস নং-৫৪৭৯}
ঙ)
ﻣُﺤَﻤَّﺪُ ﺑْﻦُ ﺃَﺑِﻲ ﻳَﺤْﻴَﻰ، ﻗَﺎﻝَ : ﺭَﺃَﻳْﺖُ ﻋَﺒْﺪَ ﺍﻟﻠﻪِ ﺑْﻦَ
ﺍﻟﺰُّﺑَﻴْﺮِ ﻭَﺭَﺃَﻯ ﺭَﺟُﻠًﺎ ﺭَﺍﻓِﻌًﺎ ﻳَﺪَﻳْﻪِ ﺑِﺪَﻋَﻮَﺍﺕٍ ﻗَﺒْﻞَ ﺃَﻥْ
ﻳَﻔْﺮُﻍَ ﻣِﻦْ ﺻَﻠَﺎﺗِﻪِ، ﻓَﻠَﻤَّﺎ ﻓَﺮَﻍَ ﻣِﻨْﻬَﺎ، ﻗَﺎﻝَ : « ﺇِﻥَّ ﺭَﺳُﻮﻝَ
ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻟَﻢْ ﻳَﻜُﻦْ ﻳَﺮْﻓَﻊْ ﻳَﺪَﻳْﻪِ ﺣَﺘَّﻰ
ﻳَﻔْﺮُﻍَ ﻣِﻦْ ﺻَﻠَﺎﺗِﻪِ
হযরত মুহাম্মদ বিন আবী ইয়াহইয়া
বলেন, আমি হযরত আব্দুল্লাহ বিন
জুবায়ের রাদ্বিয়াল্লাহু
তায়ালা আন কে দেখলাম। তিনি
এক ব্যক্তিকে নামাযের ভিতরে
হাত তুলে দুআ করছেন। যখন লোকটি
নামায শেষ করল। তখন তিনি তাকে
বললেন, নিশ্চয় রাসূল ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম নামায
শেষ করার আগে হাত তুলে দুআ
করতেন না। {আলমুজামুল কাবীর
লিততাবরানী, হাদীস নং-৩২৪}
এছাড়া আরো অসংখ্য হাদীস
রয়েছে যা প্রমাণ করে রাসূল
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
ফরজ নামাযের পর হাত তুলে দুআ
করতেন।
২য় বিষয়
পূর্বের আলোচনা দ্বারা পরিস্কার
হয়ে গেল যে, রাসূল ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম ফরজ নামায
শেষে হাত তুলে দুআ করতেন। এখন
প্রশ্ন হল, রাসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম ও সাহাবায়ে
কেরাম রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা
আন থেকে সম্মিলিতভাবে দুআ
করা প্রমাণিত কি না?
নিচে কয়েকটি হাদীস দেয়া হল।
যা পরিস্কারভাবে সম্মিলিত দুআ
করা ও সম্মিলিত দুআর প্রতি উৎসাহ
প্রদান করা হয়েছে।

ﺃَﻧَﺲَ ﺑْﻦَ ﻣَﺎﻟِﻚٍ، ﻗَﺎﻝَ : ﺃَﺗَﻰ ﺭَﺟُﻞٌ ﺃَﻋْﺮَﺍﺑِﻲٌّ ﻣِﻦْ ﺃَﻫْﻞِ
ﺍﻟﺒَﺪْﻭِ ﺇِﻟَﻰ ﺭَﺳُﻮﻝِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻳَﻮْﻡَ
ﺍﻟﺠُﻤُﻌَﺔِ، ﻓَﻘَﺎﻝَ : ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ، ﻫَﻠَﻜَﺖِ ﺍﻟﻤَﺎﺷِﻴَﺔُ،
ﻫَﻠَﻚَ ﺍﻟﻌِﻴَﺎﻝُ ﻫَﻠَﻚَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱُ، « ﻓَﺮَﻓَﻊَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ
ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻳَﺪَﻳْﻪِ، ﻳَﺪْﻋُﻮ، ﻭَﺭَﻓَﻊَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱُ ﺃَﻳْﺪِﻳَﻬُﻢْ
ﻣَﻌَﻪُ ﻳَﺪْﻋُﻮﻥَ »
হযরত আনাস বিন মালিক
রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আন
থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা
একজন গ্রাম্য সাহাবী রাসূল
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
এর কাছে আসলেন জুমআর দিন। এসে
বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! জিনিস
পত্র, পরিবার, মানুষ সবই ধ্বংস হয়ে
যাচ্ছে। একথা শুনে রাসূল
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
তার উভয় হাত উত্তলোন করলেন দুআর
উদ্দেশ্যে। উপস্থিত সবাই রাসূল
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
এর সাথে দুআর জন্য হাত উত্তোলন
করলেন। {সহীহ বুখারী, হাদীস
নং-১০২৯}
এ হাদীসে পরিস্কারভাবে রাসূল
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
থেকে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত
প্রমানিত। লক্ষ্য করুন। রাসূল
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
দুআ করেছেন, আর উপস্থিত
সাহাবীগণ আমীন আমীন বলে
সম্মিলিত মুনাজাতে অংশ
নিয়েছেন।

ﻋَﻦْ ﺣَﺒِﻴﺐِ ﺑْﻦِ ﻣَﺴْﻠَﻤَﺔَ ﺍﻟْﻔِﻬْﺮِﻱِّ – ﻭَﻛَﺎﻥَ ﻣُﺴْﺘَﺠَﺎﺑًﺎ -:
ﺃَﻧَّﻪُ ﺃُﻣِّﺮَ ﻋَﻠَﻰ ﺟَﻴْﺶٍ ﻓَﺪَﺭِﺏَ ﺍﻟﺪُّﺭُﻭﺏِ، ﻓَﻠَﻤَّﺎ ﻟَﻘِﻲَ ﺍﻟْﻌَﺪُﻭَّ
ﻗَﺎﻝَ ﻟِﻠﻨَّﺎﺱِ : ﺳَﻤِﻌْﺖُ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ – ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ
ﻭَﺳَﻠَّﻢَ – ﻳَﻘُﻮﻝُ : ” « ﻟَﺎ ﻳَﺠْﺘَﻤِﻊُ ﻣَﻠَﺄٌ ﻓَﻴَﺪْﻋُﻮ ﺑَﻌْﻀُﻬُﻢْ
ﻭَﻳُﺆَﻣِّﻦُ ﺳَﺎﺋِﺮُﻫُﻢْ، ﺇِﻟَّﺎ ﺃَﺟَﺎﺑَﻬُﻢُ ﺍﻟﻠَّﻪُ » “.
ﺛُﻢَّ ﺇِﻧَّﻪُ ﺣَﻤِﺪَ ﺍﻟﻠَّﻪَ، ﻭَﺃَﺛْﻨَﻰ ﻋَﻠَﻴْﻪِ، ﻭَﻗَﺎﻝَ : ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺍﺣْﻘِﻦْ
ﺩِﻣَﺎﺀَﻧَﺎ، ﻭَﺍﺟْﻌَﻞْ ﺃُﺟُﻮﺭَﻧَﺎ ﺃُﺟُﻮﺭَ ﺍﻟﺸُّﻬَﺪَﺍﺀِ،
ﺭَﻭَﺍﻩُ ﺍﻟﻄَّﺒَﺮَﺍﻧِﻲُّ ﻭَﻗَﺎﻝَ : ﺍﻟْﻬَﻨْﺒَﺎﻁُ ﺑِﺎﻟﺮُّﻭﻣِﻴَّﺔِ : ﺻَﺎﺣِﺐُ
ﺍﻟْﺠَﻴْﺶِ . ﻭَﺭِﺟَﺎﻟُﻪُ ﺭِﺟَﺎﻝُ ﺍﻟﺼَّﺤِﻴﺢِ ﻏَﻴْﺮَ ﺍﺑْﻦِ ﻟَﻬِﻴﻌَﺔَ،
ﻭَﻫُﻮَ ﺣَﺴَﻦُ ﺍﻟْﺤَﺪِﻳﺚِ .
হযরত হাবীব বিন মাসলামা
আলফিহরী রাদ্বিয়াল্লাহু
তায়ালা আন। যিনি মুস্তাজাবুদ
দাওয়া ছিলেন। তাকে একবার
একটি বাহিনী প্রধান নিযুক্ত করা
হয়। যুদ্ধের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি
গ্রহণের পর তিনি যখন শত্রুর সম্মুখিন
হলেন। তখন লোকদের বললেন, আমি
রাসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম কে বলতে শুনেছি। তিনি
বলেছেন “যখনি কোন দল একত্র হয়,
তারপর তাদের কথক দুআ করে, আর
অপরদল আমীন বলে তখন আল্লাহ
তাআলা তা কবুল করে নেন”।
এ হাদীস বলার তিনি [হাবীব বিন
মাসলামা রাদ্বিয়াল্লাহু
তায়ালা আন] হামদ ও সানা
পড়লেন। তারপর বললেন, হে আল্লাহ!
তুমি আমাদের প্রাণ রক্ষা কর। আর
আমাদের শহীদের সওয়াব দান কর।
{মাযমাউজ যাওয়ায়েদ, হাদীস
নং-১৭৩৪৭, মুস্তাতাদরাক আলাস
সহীহাইন, হাদীস নং-৫৪৭৮,
আলমুজামুল কাবীর, হাদীস
নং-৩৫৩৬}
আল্লামা হায়ছামী রহমতুল্লাহি
আলাইহি বলেন, উক্ত হাদীসের
সূত্রের প্রতিটি রাবী সহীহের
রাবী। ইবনে লাহিয়াহ ছাড়া।
কিন্তু সেও হাসান পর্যায়ের
রাবী। {মাযমাউয
যাওয়ায়েদ-১৭৩৪৭}

আরো একটি হাদীস উদ্ধৃত করছি। যা
আলবিদায়া ওয়াননিহায়া গ্রন্থে
আল্লামা ইবনে কাসীর রহমতুল্লাহি
আলাইহি সনদসহ বর্ণনা করেছেন।
যার সারমর্ম হল,আলা বিন হাযরামী
রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আন।
মুস্তাজাবুদ দাওয়া সাহাবী
ছিলেন। একদা বাহরাইনের জিহাদ
থেকে ফেরার পথে এক স্থানে
যাত্রাবিরতি করলে খাবার
দাবার ও তাবুর রসদসহ উটগুলো
পালিয়ে যায়। তখন গভীর রাত।
সবাই পেরেশান। ফজরের সময় হয়ে
গেলে আজান হল। সবাই নামায
আদায় করলেন। নামায শেষে আলা
বিন হাযরামী রাদ্বিয়াল্লাহু
তায়ালা আন সহ সবাই হাত তুলে সূর্য
উদিত হওয়ার সূর্যের কিরণ গায়ে
লাগা পর্যন্ত দীর্ঘ সময় দুআ করতে
থাকেন। {আলবিদায়া
ওয়াননিহায়া-৬/৩২৮-৩২৯}
উক্ত ঘটনাটির পূর্ণ বিবরণের আরবী
পাঠ
ﻭَﻗَﺪْ ﻛَﺎﻥَ ﺍﻟْﻌَﻠَﺎﺀُ ﻣِﻦْ ﺳَﺎﺩَﺍﺕِ ﺍﻟﺼَّﺤﺎﺑﺔ ﺍﻟْﻌُﻠَﻤَﺎﺀِ ﺍﻟﻌﺒَّﺎﺩ
ﻣُﺠَﺎﺑِﻲ ﺍﻟﺪَّﻋﻮﺓ، ﺍﺗَّﻔﻖ ﻟَﻪُ ﻓِﻲ ﻫَﺬِﻩِ ﺍﻟْﻐَﺰْﻭَﺓِ ﺃﻧَّﻪ ﻧَﺰَﻝَ
ﻣَﻨْﺰِﻟًﺎ ﻓَﻠَﻢْ ﻳَﺴْﺘَﻘِﺮَّ ﺍﻟﻨَّﺎﺱ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟْﺄَﺭْﺽِ ﺣَﺘَّﻰ ﻧَﻔَﺮَﺕِ
ﺍﻟْﺈِﺑِﻞُ ﺑِﻤَﺎ ﻋَﻠَﻴْﻬَﺎ ﻣِﻦْ ﺯَﺍﺩِ ﺍﻟْﺠَﻴْﺶِ ﻭَﺧِﻴَﺎﻣِﻬِﻢْ ﻭﺷﺮﺍﺑﻬﻢ،
ﻭﺑﻘﻮﺍ ﻋﻠﻰ ﺍﻷﺭﺽ ﻟﻴﺲ ﻣﻌﻬﻢ ﺷﺊ ﺳِﻮَﻯ ﺛِﻴَﺎﺑِﻬِﻢْ –
ﻭَﺫَﻟِﻚَ ﻟَﻴْﻠًﺎ – ﻭَﻟَﻢْ ﻳَﻘْﺪِﺭُﻭﺍ ﻣِﻨْﻬَﺎ ﻋَﻠَﻰ ﺑَﻌِﻴﺮٍ ﻭَﺍﺣِﺪٍ،
ﻓَﺮَﻛِﺐَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱ ﻣِﻦَ ﺍﻟﻬﻢِّ ﻭﺍﻟﻐﻢِّ ﻣﺎﻻ ﻳُﺤَﺪُّ ﻭَﻟَﺎ ﻳُﻮَﺻَﻒُ،
ﻭَﺟَﻌَﻞَ ﺑَﻌْﻀُﻬُﻢْ ﻳُﻮﺻِﻲ ﺇِﻟَﻰ ﺑَﻌْﺾٍ، ﻓَﻨَﺎﺩَﻯ ﻣُﻨَﺎﺩِﻱ
ﺍﻟْﻌَﻠَﺎﺀِ ﻓَﺎﺟْﺘَﻤَﻊَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱ ﺇِﻟَﻴْﻪِ، ﻓَﻘَﺎﻝَ : ﺃﻳُّﻬﺎ ﺍﻟﻨَّﺎﺱ
ﺃَﻟَﺴْﺘُﻢُ ﺍﻟْﻤُﺴْﻠِﻤِﻴﻦَ؟ ﺃَﻟَﺴْﺘُﻢْ ﻓِﻲ ﺳَﺒِﻴﻞِ ﺍﻟﻠَّﻪِ؟
ﺃَﻟَﺴْﺘُﻢْ ﺃَﻧْﺼَﺎﺭَ ﺍﻟﻠَّﻪِ؟ ﻗَﺎﻟُﻮﺍ : ﺑَﻠَﻰ، ﻗَﺎﻝَ : ﻓَﺄَﺑْﺸِﺮُﻭﺍ
ﻓَﻮَﺍﻟﻠَّﻪِ ﻟَﺎ ﻳَﺨْﺬِﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻣَﻦْ ﻛَﺎﻥَ ﻓِﻲ ﻣِﺜْﻞِ ﺣَﺎﻟِﻜُﻢْ،
ﻭَﻧُﻮﺩِﻱَ ﺑِﺼَﻠَﺎﺓِ ﺍﻟﺼُّﺒﺢ ﺣِﻴﻦَ ﻃَﻠَﻊَ ﺍﻟْﻔَﺠْﺮُ ﻓﺼﻠَّﻰ
ﺑﺎﻟﻨَّﺎﺱ، ﻓﻠﻤَّﺎ ﻗَﻀَﻰ ﺍﻟﺼَّﻼﺓ ﺟَﺜَﺎ ﻋَﻠَﻰ ﺭُﻛْﺒَﺘَﻴْﻪِ ﻭَﺟَﺜَﺎ
ﺍﻟﻨَّﺎﺱ، ﻭَﻧَﺼِﺐَ ﻓِﻲ ﺍﻟﺪُّﻋﺎﺀ ﻭَﺭَﻓَﻊَ ﻳَﺪَﻳْﻪِ ﻭَﻓَﻌَﻞَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱ
ﻣِﺜْﻠَﻪُ ﺣَﺘَّﻰ ﻃَﻠَﻌَﺖِ ﺍﻟﺸَّﻤْﺲُ، ﻭَﺟَﻌَﻞَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱُ ﻳَﻨْﻈُﺮُﻭﻥَ
ﺇِﻟَﻰ ﺳَﺮَﺍﺏِ ﺍﻟﺸَّﻤْﺲِ ﻳَﻠْﻤَﻊُ ﻣَﺮَّﺓً ﺑَﻌْﺪَ ﺃُﺧْﺮَﻯ ﻭَﻫُﻮَ ﻳَﺠْﺘَﻬِﺪُ
ﻓِﻲ ﺍﻟﺪُّﻋَﺎﺀِ

ﻋَﻦْ ﺳَﻠْﻤَﺎﻥَ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻨْﻪُ ﻗَﺎﻝَ : ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ
ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ : « ﻣَﺎ ﺭَﻓَﻊَ ﻗَﻮْﻡٌ ﺃَﻛُﻔَّﻬُﻢْ ﺇِﻟَﻰ
ﺍﻟﻠﻪِ ﻋَﺰَّ ﻭَﺟَﻞَّ ﻳ

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন